650
Published on সেপ্টেম্বর 11, 2014ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিং বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকায় এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে পুতুলের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন।
জাতীয়, আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে জনস্বাস্থ্য নিয়ে কাজে বিশেষ অবদানের জন্য এই পুরস্কার পেলেন তিনি। মেয়ের সাফল্যের স্বীকৃতির এই অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাও ছিলেন।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পুরস্কার হাতে নিয়ে উচ্ছ্বসিত পুতুল তা অটিস্টিক শিশু এবং তাদের পরিবারকে উৎসর্গ করেন।
মনস্তত্ববিদ পুতুল বলেন, “মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করাই আমার দায়িত্ব।”
‘এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পাওয়ায় সায়মা হোসেনকে অভিনন্দন জানিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, অটিজম নিয়ে নিজের কাজের মধ্যে দিয়েই তার এই ‘অসাধারণ অর্জন’।
এর মধ্যে দিয়ে সায়মা হোসেন মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্তদের বিষয়টিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানচিত্রে স্থান করে দিয়েছেন বলে জানায় ডব্লিউএইচও।
প্রাতিষ্ঠানিক ক্যাটাগরিতে এই পুরস্কার পেয়েছে পূর্ব তিমুরের ন্যাশনাল ম্যালেরিয়া কন্ট্রোল প্রোগ্রাম (এনএমসিপি)।
পুরস্কার দেওয়ার আগে এক বিবৃতিতে পুনম ক্ষেত্রপাল সায়মা হোসেনকে অটিজম বিষয় কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের নেতৃত্বের ‘মূল চালিকাশক্তি’ হিসেবে অখ্যায়িত করেন।
বিবৃতিতে পুনম ক্ষেত্রপাল বলেন, “বিশ্বে এবং এ অঞ্চলে অটিজম বিষয়ে সচেনতা সৃষ্টিতে বাংলাদেশ যে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তার মূল চালিকা শক্তি তিনি (পুতুল)।”
“এএসডি এবং শিশুদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজে বহুমুখী অংশীদারিত্ব তৈরিতে তার কর্মকাণ্ড সহায়তা করেছে। তার এই ভূমিকার কারণেই জাতিসংঘ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় এসব ক্ষেত্রে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে।”
পুতুলের কাজের প্রশংসা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক মারগারেট চ্যান।
তিনি বলেন, “কারিগরি দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, বৈচিত্রময় জ্ঞানের মাধ্যমে বিশ্বকে তুলে ধরা এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্র সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি তাকে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা প্যানেলের বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।”
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ‘নিউরো ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড অটিজম’ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির প্রধান হিসেবে বাংলাদেশে অটিজমের বিরুদ্ধে প্রচারণার নেতৃত্বে রয়েছেন পুতুল।
সায়মা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘অটিজম স্পিকস’র পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন। গত জুনে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলে’ অন্তর্ভুক্ত হন তিনি।
মূলত তার উদ্যোগেই ২০১১ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় অটিজম নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেই সম্মেলনের পর গড়ে ওঠে ‘সাউথ এশিয়ান অটিজম নেটওয়ার্ক’, যে সংগঠনটি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে অটিস্টিক শিশুদের স্বাস্থ্য, সামাজিক ও শিক্ষা সহায়তা দিতে অবকাঠামো গড়তে কাজ করছে।
সায়মা হোসেনের উদ্যোগেই গত বছর মে মাসে অটিজম সচেতনতায় বাংলাদেশের একটি প্রস্তাব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী পরিষদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক পুনম ক্ষেত্রপাল সিং এর উদ্যোগে এ অঞ্চলের ১১টি দেশের জন্য চলতি বছর থেকে ‘এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ চালু করা হয়েছে।
এর আওতায় জনস্বাস্থ্যে অবদানের জন্য প্রতিবছর একজন ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হবে।
গত সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ‘এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’র জন্য সায়মা হোসেনের মনোনয়ন পাওয়ার কথা জানান।
BD News
ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল