573
Published on সেপ্টেম্বর 2, 2014আজ সরকারি দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম কার্য প্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে আনা প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে এ নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবে এ ধরনের হত্যাকান্ড বন্ধ এবং গণহত্যার জন্য ইসরাইলের দায়ীদের বিচার দাবি করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের দাবি জানানো হয়।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম তার প্রস্তাবে বলেন, সম্প্রতি ইসরাইলী বাহিনী গাজায় হামলা নারকীয় চালিয়ে ২ হাজার ১০১ জন নিরীহ ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ ও শিশু হত্যা করেছে। ইসরাইলীরা শুধু হত্যাযজ্ঞ চালায়নি তারা বাড়ি-ঘর, মসজিদ হাসপাতালেও হামলা করে মানুষ হত্যা করতে দ্বিধা করেনি।
তিনি বলেন, মানবতা বিরোধী এই অপরাধে গোটা মুসলিম জাহানসহ সারা বিশ্ব আজ মর্মাহত।
তিনি গাজা এলাকার দখল করা সকল জমি ফেরৎ ও এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্ব প্রথম ইসরাইলি এ নারকীয় হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে হামলা বন্ধের আহবান জানিয়ে জাতিসংঘকে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান। এ জন্য সংসদ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
সাধারণ আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহম্মদ নাসিম, ডাক টেলিযোগযোগ তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সরকারি দলের সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, আবদুল মতিন খসরু, ডা. দীপু মনি, ড. হাসান মাহমুদ, তারানা হালিম, জাতীয় পার্টির জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, পীর ফজলুর রহমান, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের মইনুদ্দিন খান বাদল, স্বতন্ত্র সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী, তাহজিব আলম সিদ্দিকী, তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি ও বিএনএফ এর এস এম আবুল কালাম আজাদ অংশ নেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনে ১৯৪৮ সাল থেকে অব্যাহতভাবে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশও সংস্থাও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি সংসদে উত্থাপিত নিন্দা প্রস্তাব সমর্থন করেন। তিনি এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ত্বরিৎ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, গাজায় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ বড় বড় দেশগুলোর ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এসব দেশ একটা দেশের নির্বাচন নিয়ে টেলিফোন করেন, সেখানে মানবতার এ চরম লংঘনের বিরুদ্ধে তারা কোনো কথাই বলেননি। এ বিষয়ে বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ীর ভূমিকারও সমালোচনা করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফয়েল আহমেদ বলেন, গাজায় ইসরাইলে নারকীয় হত্যাকান্ডের প্রথম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন। অথচ যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বড় দেশ ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী জনগণের পক্ষে দাড়ায়নি। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সবসময় মুক্তিকামী ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে রয়েছে এবং থাকবে। তিনি আশা করেন বাংলাদেশের মতো ফিলিস্তিনি জনগণ একদিন তাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে পারবে।
সুরনিঞ্জত সেনগুপ্ত হামাসসহ যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো যুদ্ধ করেছে তাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, মানবতা বিরোধী এ অপরাধের অবশ্যই বিচার করতে হবে। তিনি ফিলিস্তিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করেন। তিনি এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের ভূমিকারও সমালোচনা করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যার ঘটনা সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য একটি সংসদীয় দল পাঠানোর প্রস্তাব করেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশ শান্তির পক্ষে এবং স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পক্ষে সর্বোপরি ফিলিস্তিনি মুক্তিকামী জনগণের পক্ষে সবসময়ই অবস্থান নিবে। তিনি গাজায় গণহত্যা তথা মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে বিচারের সম্মুখীন করার দাবি জানান।
চিফ হুইপ আসম ফিরোজ বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় হত্যা-নির্যাতনের প্রতিবাদ করে থাকে। এবারো গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ ও নিন্দা করছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হলো সত্য ও ন্যায়ে পক্ষে আওয়ামী লীগ সব সময় সোচ্চার।
জিয়াউদ্দিন বাবলু ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সংসদে নেয়া নিন্দা প্রস্তাব জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ পরিষদে উত্তাপনের জন্য প্রধান মন্ত্রীর প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, জাতিসংঘ আজ একটি কাগুজে বাঘে পরিনত হয়েছে। বাংলাদেশকেই নির্যাতিত -নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়াতে হবে।
-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)