433
Published on আগস্ট 24, 2014তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচালের নামে বিএনপি-জামায়াত জোট সকল ধর্মের বিশ্বাসীদের উপর বর্বরতা চালিয়েছে। তাদের হাত থেকে হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান কেউ রেহাই পায়নি। তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের উপর বেছে বেছে হামলা চালিয়েছে। তারা সে সময় একমাত্র সাতক্ষীরাতেই ১৭ জনকে হত্যা করেছে। কে মুসলমান, কে হিন্দু আর কে খ্রিস্টান তা তারা দেখেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ অবস্থা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন করতে হবে, যার জন্যে আমরা সম্মিলিতভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি।’
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাত করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা ও সেক্টর কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) সি আর দত্ত, আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দেব, বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি রমেশ চন্দ্র ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক তপন কান্তি দাস, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক এবং জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ পালিতও বক্তৃতা করেন। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শুরুতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৫ আগস্টের অন্যান্য শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে বাংলাদেশ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ আপনাদের মাতৃভূমি এবং আপনারা এ দেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেছেন। আমরা চাই আপনারা আপনাদের নিজ অধিকার বলে এদেশে বসবাস করবেন। কেউ আপনাদেরকে এদেশ থেকে সরাতে পারবে না।’
দেশে গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ছাড়া ধর্মনিরপেক্ষতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, নির্বিঘ্ন গণতন্ত্র ছাড়া সকল ধর্মের অধিকার নিশ্চিত হবে না, শান্তি বজায় থাকবে না এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি বলেন, ‘এই সংশোধনী সংবিধান লংঘন করে যারা ক্ষমতা দখল করবে তাদের শাস্তিও নিশ্চিত করেছে। এর মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রকে একটি দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছি।’
দেশের সকল ধর্মের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিতকরণে তাঁর সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সকল ধর্মের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাই দেশের সকল মানুষ সমানাধিকার নিয়ে বসবাস এবং স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করবে।’
দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বর্তমান সরকারের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ঈদ ও পূজাসহ সকল ধর্মীয় উৎসব সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হচ্ছে।
সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা এগিয়ে যাবো। কোনো চক্রান্ত দেশের অগ্রগতিকে রোধ করতে পারবে না।
-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)
ছবিঃ ইয়াসিন কবির জয়