তৈরী হয়েছে ৪০ হাজার অপরাধীর তথ্য সম্বলিত ডিজিটাল ডাটাবেজ

564

Published on আগস্ট 23, 2014
  • Details Image

দেশের ৬৭ কারাগারের সাজাপ্রাপ্ত বন্দি ও ২০১১ সাল থেকে যারা র্যাববের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন, তাদের এই ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ডাটাবেজ তৈরিতে র্যারবের একটি টিম গত তিন বছর নিবিড়ভাবে কাজ করে বিষয়টি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে আনে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র সমকালকে এসব তথ্য জানায়।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, র্যা বের তৈরি এই ক্রিমিনাল ডাটাবেজ থেকে জাতীয় ডাটাবেজ ও সেবামূলক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ অন্য যে কোনো সংস্থা সহায়তা নিতে পারবে।

এতে তথ্য-পরিচয় গোপন করে দাগি অপরাধীদের কোনো সংস্থায় চাকরি নেওয়ার পথ রুদ্ধ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া জামিন পাওয়ার পর অনেক অপরাধী পরিচয় ও চেহারা পাল্টে ফের অপরাধে জড়াচ্ছে। অপরাধীদের পরিপূর্ণ তথ্য সংগ্রহে থাকলে জামিনে বের হয়ে ফের অপরাধে জড়ানো কষ্টসাধ্য হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। শিগগিরই র্যা বের এই ডাটাবেজ তৈরির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হবে।

র্যা বের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) কর্নেল জিয়াউল আহসান সমকালকে বলেন, অপরাধীদের নিয়ে এ ধরনের ডাটাবেজ তৈরি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম। ডাটাবেজে এমন কিছু বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, যা কোনো অপরাধী ইচ্ছা করলেই পরিবর্তন করতে পারবে না। সরকারি-বেসরকারি যে কোনো সংস্থা এতে উপকৃত হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, র্যা বের পক্ষ থেকে দেশের ৬৭ কারাগারে বন্দি সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীর সব ধরনের তথ্য ডাটাবেজে সংযুক্ত করা হয়। এ ছাড়া অপরাধে জড়ানোর ঘটনায় বিদেশি নাগরিকদেরও তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অপরাধীদের তিন পুরুষের নাম-ঠিকানা, অপরাধের ধরন, মামলার বিবরণ, শরীরের বিশেষ চিহ্নের বর্ণনা, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, চোখের মণি-সংক্রান্ত তথ্য, বায়োমেট্রিক বিবরণসহ ১৫০ ধরনের তথ্য ডাটাবেজে রাখা হয়েছে। প্রত্যেক অপরাধীর নামে একটি কোড নম্বর খোলা হয়। ওই কোড নম্বর চাপলেই বেরিয়ে আসবে সংশ্লিষ্ট অপরাধীর সংরক্ষিত সব তথ্য। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ অপরাধীদের ডাটাবেজ নিয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করছে। জঙ্গি ও দুর্ধর্ষ অপরাধীদের ব্যাপারে সেখানে তথ্য থাকে। বাংলাদেশ সে পথে এগোতে চায়।

ডাটাবেজ তৈরির সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানান, সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দিদের সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে র্যাৈব একাধিক টিম গঠন করে। তারা দেশের সব কারাগারে গিয়ে অপরাধীদের তথ্য সংগ্রহ করেন।এ ছাড়া জঙ্গিদের ব্যাপারে ডাটাবেজে সব ধরনের তথ্য থাকছে। জঙ্গিদের পরস্পরের মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক ছিল_ এ ধরনের বিবরণও যুক্ত করা হয়েছে। একজন অপরাধী তার চেহারার বাহ্যিক অবয়ব সম্ভাব্য কী কী ধরনের করতে পারেন, এমন একাধিক ছবি ডাটাবেজে থাকছে। এ ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার চিহ্নিত অপরাধীদের এ তালিকায় যুক্ত করা হবে। কোনো অপরাধী সম্পর্কে সর্বশেষ কোনো তথ্য পাওয়া গেলে, তা ডাটাবেজে যুক্ত হবে।

জানা গেছে, সারাদেশে অন্তত পাঁচ লাখ বিভিন্ন ধরনের অপরাধী শনাক্ত করার সব ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ডাটাবেজ কার্যকরের মধ্য দিয়ে তারা নিজেদের লুকাতে ব্যর্থ হবে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় পলাতক জঙ্গি রাকিব তার চেহারা পাল্টে পালানোর চেষ্টা করে। তবে রাকিবের অবয়ব পাল্টানোর সম্ভাব্য সব ধরনের ছবি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে থাকায় দ্রুত তাকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়। অন্য দু'জনও কেমন অবয়ব ধারণ করতে পারে, তার ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। কিছুদিন আগেও কোনো তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বা অপরাধী গ্রেফতার হলে তার ছবি তুলে রাখা হতো। বিভিন্ন থানায় ঢুকতেই বোর্ডে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের নাম টানিয়ে রাখা হয়। এখন কোনো তালিকাভুক্ত অপরাধী আটক হলে তার ফিঙ্গারপ্রিন্টসহ সব তথ্য রাখা হচ্ছে।

-দৈনিক সমকাল

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত