বিএনপি-জামাতের নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেশবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহবান

506

Published on আগস্ট 23, 2014
  • Details Image

তিনি বলেন, নৃশংসতাকারীরা রাজনৈতিক কোন সংজ্ঞা বা সংবিধান, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রে মোটেও বিশ্বাস করে না। তাদের কাছে মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই। তাই তারা আবার ক্ষমতায় আসলে তাদের কাছে জনগণের পাওয়ার কিছু নেই।

প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে সারাদেশে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক সহিংসতা, ভিডিও ও আলোকচিত্র সম্বলিত বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের একটি বিশেষ প্রকাশনা অবমুক্ত করার সময় এ কথা বলেন।

‘রক্তরঞ্জিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই প্রকাশনা দেশের জনগণের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসের একটি চিত্র। এটি রাজনৈতিক বিক্ষোভের আড়ালে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র পরিণত করার লক্ষ্যে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক সহিংসতার প্রামাণ্য দলিল।

তিনি দেশে যাতে এ ধরনের পরিস্থিতির আর কোন পুনরাবৃত্তি না ঘটে এবং কোন রাজনৈতিক দল জনগণের লাশ নিয়ে তামাশা করতে এবং জনগণকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নৃশংসতার সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক সহিংসতার তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা সব সময় প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করে।

তিনি বলেন, তারা ১৯৭১ সালে গণহত্যা চালিয়েছিল, জাতির জনক ও জাতীয় চার নেতা, ১৯৭৫ সালের পর অনেক মুক্তিযোদ্ধাকে এবং ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। একইভাবে তারা ২০১২ ও ২০১৩ সালে বাংলাদেশের জনগণের ওপর চড়াও হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচন বর্জন করা ছিল বিএনপি’র একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এটি তাদের স্বাধীনতা। কিন্তু তারা কিভাবে নির্বাচন বানচাল করার জন্য সাধারণ মানুষ, পুলিশ, বিজিবি, সেনা সদস্যকে নির্বিচারে হত্যা ও নৈরাজ্যের সৃষ্টি এবং সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারার পথ অবলম্বন করেছিল।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি তাদের আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। তাই তারা জনগণকে হত্যা করে সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করেছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেছে এবং তাঁর সরকার ভবিষ্যতে তাই করবে।

তিনি বলেন, সহিংসতার কারণে যারা প্রাণ হারিয়েছে আমরা তাদের ফিরিয়ে আনতে পারব না। তবে আমরা সহিংসতার পুনরাবৃত্তি পরিহার করা এবং আহত ব্যক্তি ও নিহতদের আত্মীয়দের জন্য স্বস্তি এনে দেয়ার চেষ্টা করতে পারি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ক্ষমতার জন্য লালায়িত নই। ক্ষমতা বিলাসী জীবনযাপন করার জন্য কোন পথ নয়। আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতা যুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা যার জন্য ৩০ লাখ লোক ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শাহাদাৎ বরণ করেছেন।

অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের নৃশংসতা শিকার কয়েকটি পরিবারের সদস্য ও আহত কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে তাদের কয়েকজন জড়িয়ে ধরেন এবং কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। প্রধানমন্ত্রী তাদের সান্তনা দেন এবং মনোযোগ দিয়ে তাদের সমস্যার কথা শোনেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও বইয়ের প্রকাশনা সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম সভায় সভাপতিত্ব করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। আওয়ামী লীগের প্রচারণা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও প্রচারণা উপ-সম্পাদক অসীম কুমার উকিল সভা পরিচালনা করেন।

বিএনপি-জামায়াতের নৃশংসতার শিকার কয়েকজন ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন ওইসব দিনের রোমহর্ষক বিবরণ দেন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া আহত কয়েকজন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

তাদের মধ্যে রয়েছে- কাভার্ড ভ্যানের ড্রাইভার রমজান আলী, পুড়ে মারা যাওয়া বালক মুনিরের পিতা, রেলওয়ে কর্মচারী পিয়ারুল ইসলাম, ফটিকছড়ির আওয়ামী লীগ সমর্থক হেলাল উদ্দিন পিয়ারু, শাহবাগের বাসে অগ্নিকান্ডে আহত এডভোকেট খোদেজা নাসরিন, পুলিশ কনস্টেবল হযরত আলীর স্ত্রী লায়লা খাতুন ও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার প্রিসাইডিং অফিসার সাইদুল ইসলাম।

মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবর্গ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সম্পাদকবৃন্দ, সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)

-ছবি কৃতজ্ঞতাঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত