532
Published on আগস্ট 6, 2014প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর পূর্ব ও পশ্চিম অংশে একটি করে আরো দু’টি শিশু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তিনি আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০১৪ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণকালে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা ব্রেস্ট ফিডিংয়ের জন্য সর্বোচ্চ সহায়তা ও উৎসাহ প্রদানের জন্য স্বাস্থ্যজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, মায়ের দুধ পান করা নবজাত শিশুর অধিকার। তিনি মাতৃদুগ্ধ (বিপণন নিয়ন্ত্রণ)-২০১৩ আইন যথাযথভাবে প্রয়োগের জন্যও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র কোরআন শরীফের সুরা বাকারা’র ২৩৩ আয়াতে শিশুকে ২ বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ খাওয়ানোর নির্দেশনা রয়েছে।
শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য মায়ের দুধের কোন বিকল্প নেই একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৬ মাস পর্যন্ত শিশুর জন্য মায়ের দুধই একমাত্র পরিপূর্ণ ও নিরাপদ খাবার।
ব্রেস্ট ফিডিংয়ের প্রতি জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ কওে শেখ হাসিনা বলেন, গত ৫০ বছরে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার ৪৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৬৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এম নিয়াজউদ্দিন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. দীন এম নূরুল হক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের ডিজি নূর হোসেন তালুকদার, বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি এস কে রায় ও জাতীয় স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. এম শাহনেওয়াজ বক্তৃতা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ২০০৯ সালে মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ সরকারীভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তখন থেকে দেশব্যাপী জোরেসোরে মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ পালিত হওয়ায় মানুষের মাঝে সচেতনতা বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নবজাত শিশুর বেড়ে ওঠা ও শারীরিক মানসিক সুস্থতার প্রয়োজনীয় সবগুলো উপাদান মায়ের দুধে আছে।
সফলভাবে মায়ের দুধ খাওয়াতে বাড়তি কোন টাকার প্রয়োজন হয় না। তবে যে মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন তার জন্য তাকে একটু বেশি খাবার দিতে হবে। এজন্য প্রসূতি মায়ের প্রতি যত্নবান হতে হবে’। শুধু নারী নয়, পরিবারের পুরুষ সদস্যদের এ ব্যাপারে মুখ্য ভূমিকা পালন করা উচিত একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিশুকে দুধ কিনে খাওয়ানোর চেয়ে মায়ের যত্ম নেয়ার খরচ অনেক কম।
শেখ হাসিনা বলেন, বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার গুড়ো দুধ আমদানী করতে হয়। এর বেশীরভাগই শিশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু শতভাগ শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ালে এ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি সুস্থ জাতি, শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য এবং জনগণের পুষ্টিসেবা নিশ্চিত করতে নেয়ার বিভিন্ন কর্মকান্ডের উল্লেখ করে বলেন, সরকার সাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে জাতীয় পুষ্টিসেবা নীতি ঘোষণার পাশাপাশি ৫ বছর মেয়াদী জাতীয় পুষ্টিসেবাসহ অন্যান্য কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া ইতোমধ্যে নবজাতকের স্বাস্থ্য কৌশলপত্রি অনুমোদিত হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাসে উন্নীত করেছে। সরকারি বেসরকারি অফিসে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের কাজ চলছে।
কর্মজীবী ‘ল্যাকটোটিং মাদার সহায়তা তহবিল’ থেকে কর্মজীবী মায়েদের ভাতা দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যখাতে এসব কর্মকান্ড জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রসংসিত হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ এমডিজি পুরস্কার, সাউথ সাউথ এ্যাওয়াডসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার ‘মানববাহক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুখী সুস্থ ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সকলকে এক সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।