২০১৪-১৫ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৩৩,২০০ মিলিয়ন ডলার নির্ধারন করেছে সরকার

707

Published on জুলাই 21, 2014
  • Details Image

গতকাল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সম্মেলন কক্ষে ২০১৪-১৫ অর্থবছরের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণী সভায় এই তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

প্রসঙ্গত, গত অর্থবছর (২০১৩-১৪) রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩,০৫০ কোটি ডলার। এর বিপরীতে ৩,০১৭ কোটি ডলার আয় হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ শতাংশের মতো কম।

সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, গত অর্থবছরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ব্যবসার-বাণিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরপরও রপ্তানিকারকরা দক্ষতার সঙ্গে রপ্তানি বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছেন। আমরা আশা করছি, আগামী অল্প দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ৫০,০০০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে সক্ষম হবে। সরকার ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের কাছাকাছি আমরা এসেছি। গত বছরের মাঝামাঝিতে যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকতো তবে এটা অতিক্রম করা সম্ভব হতো।

মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মোতাবেক রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। পণ্য এবং বাজার বহুমুখীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি দ্রুত এগিয়ে যাবে। পৃথিবীর বহু দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য এগিয়ে আসছে। চিলি ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি ও কোটা ফ্রি সুবিধা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। জাপান, অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি সুবিধা প্রদান করছে।

বাংলাদেশের ব্যবসার পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে সরকার প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া রোডম্যাপ মোতাবেক বেশির ভাগ শর্ত ইতিমধ্যে পূরণ করা হয়েছে, অবশিষ্টগুলোর কাজ অব্যাহত রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা স্থগিতের পরও সেখানে বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস আগামী দিনে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হয় বা রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়, এমন কোন কর্মসূচি কেউ দিবে না। এতে করে দেশের অর্থনীতি দ্রুত এগিয়ে যাবে।

চলতি অর্থবছরে তৈরী পোশাকের ওভেন খাতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৬৮১.৭৭ মিলিয়ন ডলার। যার প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৯.৯৬%। নিটওয়্যারে ১৩২১৫.৬১ মিলিয়ন ডলার লক্ষ্যমাত্রায় প্রবৃদ্ধি ৯.৬৭%। হোম টেক্সটাইলে লক্ষ্যমাত্রা ৮৫০ মিলিয়ন ও প্রবৃদ্ধি ৭.২৪%। পাট ও পাটজাত পণ্যে লক্ষ্যমাত্রা ৮৩৫.৩৫ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ১.৩২%। চামড়ায় লক্ষ্যমাত্রা ৬২৫ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ২৩.৬৩%। পাদুকায় লক্ষ্যমাত্রা ৬৫০ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ১৮.১৬%। কৃষিজাত পণ্যে ৬৭৬.১৪ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ৯.৯৩%। হিমায়িত খাদ্যে লক্ষ্যমাত্রা ৭৩১.০৮ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ১৪.৫৬%। বাইসাইকেলে লক্ষ্যমাত্রা ১২১.২১ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ৭.৩৭%। প্লাস্টিক পণ্যে ৯০.২২ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ৫.২৭%। ওষুধ শিল্পে লক্ষ্যমাত্রা ৭৩.০২ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ৫.৪৬% এবং ফার্নিচার শিল্পে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ মিলিয়ন ডলার ও প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৭.৪৩%।

বাণিজ্য মন্ত্রীর সভাপতিত্বে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম, ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান শুভাশিষ বসু ও বিকেএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আর আগামীতে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি করে দেশের অর্থনীতি ভঙ্গুর না করার আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম, বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম প্রমুখ।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত