2034
Published on জুন 25, 2014প্রতিবছর ইউনাইটেড ন্যাশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আঙ্কটাড) তৈরি করা এই প্রতিবেদন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশ করা হয়। আঙ্কটাডের পক্ষে বিনিয়োগ বোর্ড এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে থাকে। মঙ্গলবার নিউইয়র্ক, জেনেভা, দিল্লি, টোকিওসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে একযোগে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। ২০১২ সালে বাংলাদেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগ ছিলো ১২৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। বাংলাদেশে ২০১৩ সালে সম্পূর্ণ নতুন বিনিয়োগ এসেছে ৫৪ কোটি ১০ লাখ ডলারের, যা আগের বছরের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি। সবেচেয়ে বেশি বিনিয়োগ এসেছে অর্জিত আয়ের পুনঃবিনিয়োগের মাধ্যমে। এখাতে বিনিয়োগ হয়েছে ৬৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা ২০১২ সালের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি। আর মূল কোম্পানি থেকে বাংলাদেশে কার্য রত কোম্পানিগুলো ঋণ (ইন্ট্রা কোম্পানি লোন) এনেছে ৩৬ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা ২০১২ সালের তুলনায় ৭৪ শতাংশ বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের বছরের চেয়ে ২০১২ সালে টেলিকমিউনিকেশন খাতে বিনিয়োগ কমেছে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার। ২০১৩ সালে এ খাতে বিনিয়োগ এসেছে ৩২ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের বছর ছিলো ৩৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। থ্রি জি নেটওয়ার্ক স্থাপন ও ফি পরিশোধের জন্য মূলত টেলিকমিউনিকেশন খাতে বিনিয়োগ হয়েছে। এসব বিনিয়োগ থেকে কর্মসংস্থান বিশেষ বাড়েনি। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে দ্বিগুনের বেশি। ২০১২ সালে ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ ছিলো ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলারের। ২০১৩ সালে তা দাড়িয়েছে ৩২ কোটি ৭০ লাখ ডলারে।
২০১৩ সালে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয়েছে টেক্সটাইল ও পোশাক খাতে। ওই সময়ে এখাতে ৪২ কোটি ২০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন থেকে পোশাক খাতের যেসব বিনিয়োগ সরে গেছে তার একটি অংশ বাংলাদেশে আসায় এ খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। ২০১৩ সালে এ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে ৯ কোটি ৯০ লাখ মিলিয়ন ডলারের, যা আগের বছর ছিলো ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় ৩৬ বিলিয়েন ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ভারতে বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে ২৪ বিলিয়ন ডলারের। দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগে আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আর পাকিস্তানে বিদেশি বিনিয়োগে ৫২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এসময়ে দেশটিতে ১৩০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে।
বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ার কারণ জানতে চাইলে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদ বলেন, “বিনিয়োগ একটি দীর্ঘমেয়াদি বিষয়। শুধু আজকের পরিস্থিতি বিবেচনায় কেউ বিনিয়োগ করে না। বর্তমান সরকার বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করছে। “এছাড়া বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অবারিত সুযোগ রয়েছে।”
এস এ সামাদ বলেন, “তাইওয়ানের সাথে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক যোগাযোগ না থাকলেও শুধু বিনিয়োগের জন্য তাদেরকে (তাইওয়ান) বাংলাদেশে একটি কমার্শিয়াল অফিস খোলার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশে কার্যারত বিদেশি কোম্পানিগুলো ২০১৩ সালে ৩৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার মুনাফা নিয়েছে।
সারা বিশ্বে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৯ শতাংশ। ২০১৩ সালে বিশ্বব্যাপী ১ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে। এই বড় বিনিয়োগের বেশির ভাগটাই হয়েছে আমেরিকা (১৮৮ বিলিয়ন), চীন (১২৪ বিলিয়ন) ও রাশিয়ান ফেডারেশনে (৭৯ বিলিয়ন)।
আঙ্কটাডের পূর্বাভাস মতে, ২০১৪ সালে এই বিনিয়োগ একটু বেড়ে ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন হবে। ২০১৬ সালে তা হবে ১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন।