496
Published on জুন 7, 2014একইসঙ্গে তিনি তাদের কাছে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতির কথাও তুলে ধরেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি আপনারা বাংলাদেশে ব্যবসার জন্য নিশ্চিতভাবেই আকর্ষণীয় পরিবেশ ও সুযোগ সুবিধা পাবেন।
কুনমিংয়ের হাইগেং কনফারেন্স সেন্টারে আজ সকালে নবম চায়না- সাউথ এশিয়া বিজনেস ফোরামে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ জামিল আহমেদ, সার্কের সেক্রেটারি জেনারেল অর্জুন বাহাদুর থাপা, সার্ক চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ইসমাইল আসিফ, চায়না কাউন্সিল ফর প্রমোশন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের চেয়ারম্যান জায়াং চেংওয়ে, ইউনান প্রদেশের কমিটি অব পিপলস কংগ্রেসের সেক্রেটারি কিন গুয়াংরং বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ সার্কভুক্ত বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী এবং চীন, বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, পাকিস্তান ও নেপালের বিভিন্ন বাণিজ্য সংস্থার নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
শেখ হাসিনা বলেন, চীনা বিনিয়োগকারীরা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ (পিপিপি) ও বিল্ড-ওন-অপারেট-ট্রান্সফার (বুট) প্রকল্পের আওতায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, জলপথ, সড়ক ও মহাসড়ক নির্মাণের মতো বাংলাদেশের বিশেষ বিনিয়োগ কর্মসূচিতে আগ্রহ খুঁজে পেতে পারেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন জাহাজ থেকে শুরু করে স্বস্তা পণ্য পর্যন্ত উৎপাদন করছে। তিনি আরো বলেন, আমাদের সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দর ও বিমানবন্দরসমূহ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যবসার জন্য সহায়ক।
বাংলাদেশের এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) বিদেশী বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় জায়গা- একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সরকার চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামে পৃথক অর্থনীতি ও শিল্পাঞ্চল বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনা করছে।
এছাড়া বাংলাদেশে সাতটি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা গঠন করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা দ্বিতীয় চায়না-সাউথ এশিয়া এক্সপোজিশনে আমন্ত্রণ জানানোয় ইউনান প্রদেশের গভর্নরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য প্রতিবেশীদের দিকে হাত বাড়ানো চীনা নেতাদের একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিবিড় ও ব্যাপক অংশীদারিত্ব ভিত্তিক বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক সহযোগিতা, পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধার ওপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি বলেন, এ সম্পর্ক আরো জোরদারে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে আগ্রহী।
শেখ হাসিনা বলেন, চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারদের অন্যতম এবং আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস দেশ।
তিনি বলেন, ‘চীন-বাংলা বাণিজ্য ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে চীনে বাংলাদেশের রফতানি ছিল মাত্র ৪৫৮.১২ মিলিয়ন ডলার কিন্তু আমদানি ছিল ৬.৩০৭ বিলিয়ন ডলার।’
তিনি বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হলে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আরো বাংলাদেশী পণ্য চীনের বাজারে প্রবেশ করতে দেয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে আরো তৈরি পোশাক, ওষুধ, হস্তশিল্প, সিরামিক, চামড়াজাত পণ্য ও মৎস্য চীনের আমদানি করা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে চীনের উদ্যোক্তারা আরো বিনিয়োগ করে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাসে সাহায্য করতে পারে।
তিনি বলেন, চীনের উদ্যোক্তরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর বাজারে প্রবেশে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা নিতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উদার। এক্সিট পলিসিতে বাধা নেই- সে সাথে শতভাগ বিদেশী ইক্যুইটি সুবিধা, রয়েলটি ও মুনাফা দেশে পাঠানোর সুবিধা, বিদেশী বিনিয়োগের সুরক্ষা ও জ্বালানি মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অবকাঠামো উন্নয়ন ও জ্বালানি সক্ষমতা গড়ে তোলার সহযোগিতা ছাড়াও চীনের বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন খাতে যৌথ উদ্যোগ বা একক বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফার্মাসিউটিক্যাল, পেট্রোকেমিক্যাল, জাহাজ তৈরি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, টেক্সটাইল, সিরামিক, চামড়া, পর্যটন, ম্যানুফ্যাকচারিং, আইসিটি, মানবসম্পদের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নসহ আকর্ষণীয় ভ্যালু এডেড খাতে চীন বিনিয়োগ করতে পারে।