525
Published on মে 28, 2014এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড)-এ কেবল জাপানী বিনিয়োগকারীদের জন্য ৪০টি শিল্প প্লট বরাদ্দ রাখার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা জাপানী বিনিয়োগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেই।’ এ প্রেক্ষিতে তিনি জাপানী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া আশা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জেটরো নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিতে পেরে তিনি খুবই খুশী। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এর ফলে দুদেশের বিদ্যমান সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।
জেটরো সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি খাতের নেতা হিসেবে আপনারা ব্যতিক্রমী উদ্যোগ, কঠোর পরিশ্রম ও আন্তরিকতা দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে গতির সঞ্চার করেন।’
তিনি বলেন, অনেক বাধা বিপত্তি সত্ত্বেও জাপানী বিনিয়োগকারীরা তাদের উদ্ভাবনী ও মানব সম্পদ নিয়ে কয়েক দশক ধরে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করে আসছে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, জাপানী বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কারীগরী সহযোগিতার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন, জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী মিদোরি মাতসুশিমা, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বিষয়ক জাপান-বাংলাদেশ কমিটির চেয়ারম্যান কোজি টাকাইয়ানাগি এবং জেটরোর চেয়ারম্যান হিরোইকি ইশিগে।
পরে বেপজা জোনে জাপানী বিনিয়োগকারীদের জন্য প্লট বরাদ্দ বিষয়ে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন অথরিটিজ (বেপজা) ও জেটরোর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী মিদোরি মাতসুশিমার উপস্থিতিতে বেপজা চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল হাবিবুর রহমান ও জেটরো প্রতিনিধি কে কাওয়ানো সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
‘বাংলাদেশ সম্ভাবনাময় দেশ’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিদেশী সহায়তায় এই সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের চমৎকার বন্ধু হিসেবে জাপান ‘আমাদের অবকাঠামোগত ও মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবেশসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতের সুরক্ষায় সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপানের ব্যবসায়ী ও পর্যটকগণ দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাংলাদেশে আসছেন।’
জাপানের শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে এনটিটি দোকোমো, কেডিডিআই, ওয়াইকেকে, ইউএনআইকিউএলও, মিতসুবিশি, ইতোচু, মিতসুই, এসইআইওয়াইইউ ও মারুবিনি। জাপানি ব্যবসায়ীরা বিদেশে অন্যতম ব্যবসাস্থল হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের পরিমাণ ১৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশী ও বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাছাড়া রয়েছে শক্তিশালী ক্রেডিট রেটিং, যা বিশ্বের শীর্ষ ৪২ অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে অন্যতম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, প্রাকৃতিক দুযোর্গ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত ৫ বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের ওপরে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য জিডিপির হার ২০১৭ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে উন্নীত করা এবং পরবর্তীতে আরও এগিয়ে যাওয়া। আমাদের পরিশ্রমী জনগণ এবং জাপানের মতো দেশের সংগে নির্ভরযোগ্য বাণিজ্য ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বের ফলে এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তরুণ ও পরিশ্রমী শ্রমশক্তির প্রতিযোগিতামূলক ও সাশ্রয়ী মজুরী, দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কম খরচে ব্যবসা পরিচালনা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের বাজারে শুল্ক ও কোটা মুক্ত প্রবেশাধিকার আমাদের সাফল্যকে ত্বরান্বিত করেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সবচেয়ে উদার সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে বিধিনিষেধমুক্ত নিষ্ক্রমণ নীতিসহ শতভাগ বৈদেশিক মূদ্রায় বিনিয়োগের সুযোগ, সহজেই লভ্যাংশ প্রেরণ, বৈদেশিক বিনিয়োগের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীল জ্বালানী মূল্য ।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সম্মানে দেয়া জাপান বাংলাদেশ কমিটি ফর কমার্শিয়াল এ্যান্ড ইকোনোমিক কো-অপারেশন (জেবিসিসিইসি)’র মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।
-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা