572
Published on মে 27, 2014সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্যে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো এ্যাবে আয়োজিত তাঁর বাসভবনে এক নৈশভোজে ভাষণকালে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, আমাদের মানবসম্পদের উন্নয়ন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে জাপান অধিকতর অবদান রাখতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংস¯তূপ থেকে জাপানের বিস্ময়কর উন্নতি সাধনের জন্য আমরা এ দেশের জনগণের উদ্যমশীলতার প্রশংসা করি- যা জাপানকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০১১ সালের ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যন্ত হলেও জাপান বাংলাদেশকে দেয়া উন্নয়ন সহায়তা থেকে সরে আসেনি।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও দু'দেশের বন্ধুত্বের প্রতিফলন ঘটেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উভয় দেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করেছে, অভিন্ন অবস্থান নিয়েছে এবং একে-অপরের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমর্থন দিয়েছে।
তিনি আন্তর্জাতিক অভিবাসন এবং বাংলাদেশের মতো জলবায়ূ পরিবর্তনের শিকার দেশগুলোর নিরাপত্তায় ২০১৫ পরবর্তী জাতিসংঘ উন্নয়ন এজেন্ডায় তাঁর (বাংলাদেশ) দেশের দাবির প্রতি সমর্থন জানাতে জাপানের সহায়তা কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশী মানুষের চরম দুর্দশার সময় এমনকি জাপানের স্কুলের ছেলে-মেয়েদের নিজেদের পকেট মানি থেকে অর্থ সংগ্রহ ও সঞ্চয় করে বাংলাদেশকে সহায়তার কথা স্মরণ করেন।
তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, দু'দেশের বন্ধুত্ব তাৎপর্যপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আপনার সফর আমাদের লক্ষ্য অর্জনকে বেগবান করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, চলতি বছর সুবিধাজনক কোনো সময়ে এই সফর অনুষ্ঠিত হবে।
শেখ হাসিনা তাঁর এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের জন্য জাপান সরকারের অভূতপূর্ণ আতিথেয়তা ও সৌজন্যে শিনজো এ্যাবেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সূর্যোদয়ের দেশ নিপ্পনে তাঁর এই সফর জাপানে তাঁর অনেক স্মরণীয় সফরের অন্তর্ভুক্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও জাপান অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। এই সম্পর্ক দু'দেশের সহজাত বন্ধুত্বে বিশ্বাস, পারস্পরিক সমর্থন এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থেকে উৎসারিত। ১৯৭১ সালে আমাদের মু্িক্তযুদ্ধে জাপান ও এর জনগণের অব্যাহত সমর্থন ও সহানুভূতির মধ্যদিয়ে এই সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম সুযোগে ১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাপান সফর করেন। এই সফরের পর দু'দেশের সম্পর্ক উল্লেখযোগ্যভাবে গভীরতর এবং জাপান বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উন্নয়ন অংশীদার ও অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের উৎসে পরিণত হয়েছে।
শেখ হাসিনা শিনজো এ্যাবের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তাঁর দৃঢ় অর্থনৈতিক সংস্কারে অনুপ্রাণিত হয়ে জাপান আরো উদ্দীপনা ও কর্মচাঞ্চল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে।
-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)