মৎস্য ও প্রানীসম্পদ খাতকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে হবেঃ প্রধানমন্ত্রী

623

Published on মে 22, 2014
  • Details Image

তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদকে প্রধান বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের খাতে পরিণত করার পাশাপাশি স্থানীয় খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘আমাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ব্যবহার ও এ খাতের উন্নয়নে ব্যাপক গবেষণা চালাতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণে এসব কথা বলেন।

নদীমাতৃক বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র এলাকার সম্পদ দিয়ে দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের এই বিশাল মৎস্য সম্পদকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বাজারজাত ও রপ্তানীর উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতকে বাড়তি সুবিধা দেয়া হলে এ খাত বিশ্বে বাংলাদেশের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ আসন প্রতিষ্ঠা এবং দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী সায়েদুল হকও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবদুস সোবহান সিকদার, প্রধানমন্ত্রী কার্যলয়ের সচিব আবুল কালাম আজাদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপাপ্ত সচিব সেলিনা আফরোজ এবং মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ গত অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে ধরে রেখেছে। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে কেউ ভাবেনি এটা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, তাঁর সরকারের নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই বিগত সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও দেশের প্রবৃদ্ধি ৬ এর উপর এবং মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে ১১৮০ মার্কিন ডলার পৌঁছেছে। তাই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরো ত্বরান্বিত করতে এ মন্ত্রণালয়কে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদ-নদী, জলমহাল ও বিশাল সমুদ্রসীমায় যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ রয়েছে, তা কাজে লাগাতে হবে। নতুন কি কি চাষ করা যায়, তার উদ্যোগ গ্রহণ এবং এসব উৎপাদিত পণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাত করায় মন্ত্রণালয়কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, পুস্টিমান বৃদ্ধির পাশাপাশি এসব পণ্য রপ্তানীতেও মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগী হতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ইতোমধ্যে হাঁস-মুরগী পালন, গরু মোটাতাজাকরণ ইত্যাদি কর্মসূচীতে যারা সরকারের সহযোগিতা নিয়েছে, তাদের খোঁজ-খবর রাখতে হবে। তারা কি সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে, তা জেনে সমাধান দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে সীমিত সম্পদ আছে, দেশের উন্নয়নে তার সঠিক ব্যবহার করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ইলিশ মাছ রক্ষায় জাটকা নিধন রোধ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, জাটকা ধরা নিষেধকালীন সময়ে জেলেদের শুধু চাল দিলেই হবে না। সে সময়ে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাহলেই তারা ওই সময়ে আর নদীতে মাছ ধরতে যাবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ থেকে হিমায়িত চিংড়ি এবং অন্যান্য মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ফ্রান্স, হংকং, সিংগাপুর, সৌদি আরব, সুদান ও অন্যান্য উন্নত দেশে রপ্তানি হচ্ছে।

তিনি বলেন, হ্যাজার্ড এ্যানালাইসিস এ্যান্ড ক্রিটিকাল কন্ট্রোল পয়েন্ট (এইচএসিসিপি) বিধিমালা অনুসরণ করে মানসম্পন্ন চিংড়ি রপ্তানির কারণেই বর্তমানে এ সাফল্য অর্জিত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্রের চাহিদা মোতাবেক ট্রেসিবিলিটি বিধান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর সরকারের সফলতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্যের হার ২৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে তারা সক্ষম হয়েছে।

সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন একজন শ্রমিক ১ দিনের আয় দিয়ে ৮/১০ কেজি চাল ক্রয় করতে পারে। মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের চাহিদাও বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সে চাহিদা অনুযায়ী পুস্টি ও আমিষ জাতীয় খারাব যোগান দেয়ার দায়িত্ব মন্ত্রণলয়ের।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে ২০২১ সালের আগেই আমরা মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারব।

সুত্রঃ বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত