498
Published on এপ্রিল 22, 2014
প্রকল্প বরাদ্দের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য ১ হাজার ৪৫৩ কোটি ২১ লাখ টাকা রয়েছে। অনুমোদিত ৫টি প্রকল্পের মধ্যে নতুন প্রকল্প ৪টি বাকি ১টি সংশোধিত প্রকল্প। ৩টি প্রকল্প সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে।
সভায় ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য এনজিএন ভিত্তিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপন’ শীর্ষক প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়।
১ হাজার ৮৬৩ কোটি ১৫ লাখ টাকার এ প্রকল্পে সরকারি অর্থায়ন ৪০৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। বাকী ১ হাজার ৪৫৩ কোটি ২১ লাখ টাকা চীন সরকার প্রকল্প সাহায্য হিসেবে দেবে। প্রকল্পটির বাস্তবায়নের মেয়াদকাল ধরা হয়েছে ২০১৪ সালের মার্চ থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত। সারাদেশে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে বিটিসিএল ভয়েসকল ছাড়াও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা প্রদানের জন্য বিদ্যমান এক্সচেঞ্জগুলোতে স্থাপিত কম ক্ষমতা সম্পন্ন পুরানো ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি আধুনিক ইন্টারনেট ও মাল্টিমিডিয়া নির্ভর ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত করবে।
এজন্য বিটিসিএল বিদ্যমান কপার বেইজ্ড মুল টেলিফোন নেটওয়ার্ক উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবল নেটওয়ার্ক দ্বারা প্রতিস্থাপন করবে। জনসাধারণের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যে আইসিটি সুবিধা পৌঁছে দিয়ে দেশে টেলিডেনসিটি বৃদ্ধি এবং টেলিএক্সেস সুবিধার আরো সম্প্রসারণ করাই এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য।
একনেক সভায় জানানো হয়, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশের গ্রাম অঞ্চল পর্যন্ত ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপিত হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৭ লাখ সংযোগ ক্ষমতাসম্পন্ন ঢাকায় ১টি ইন্টারনেট প্রটোকল মাল্টিমিডিয়া সাবসিস্টেম (আইএসএস) প্লাটফর্ম স্থাপন করা হবে। এর অতিরিক্ত হিসেবে চট্টগ্রামে একই ক্ষমতাসম্পন্ন আরো ১টি আইএসএস প্লাটফর্ম স্থাপিত হবে।
সভায় আরো জানানো হয়, দেশে বেসরকারি খাতে একাধিক মোবাইল অপারেটর থাকলেও তারা মূলতঃ ভয়েস কল সেবা প্রদান করে থাকে। সীমাবদ্ধ ব্যান্ড উইড্থে ডাটা সার্ভিস (ইন্টারনেট) প্রদান করলেও তা বেশ ব্যয় বহুল। আলোচ্য প্রকল্পের মাধ্যমে বিটিসিএল এর বিদ্যমান নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন করে ভয়েস কলের পাশাপাশি ইন্টারনেট ও ভিডিও আদান প্রদান সেবা প্রদান করা হবে। ফলে ১০ লাখ ল্যান্ড টেলিফোন গ্রাহকদের নতুন করে সংযোগ না নিয়ে ইন্টারনেট সুবিধার আওতাভুক্ত হবে। এর ফলে সাশ্রয়ী মূল্যে ভয়েসকল ও ইন্টারনেট সেবা প্রদানের জন্য দেশে একটি সুষম ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি হবে।
এছাড়া আশুলিয়ায় আহসানিয়া মিশনের ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করার লক্ষ্যে ‘প্রভিশন ফর ইক্যুইপমেন্ট এন্ড প্রফেশনাল ট্রেনিং ফর আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার এন্ড জেনারেল হসপিটাল’ শীর্ষক ১শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয়।
এ প্রকল্পে সরকার ৬০ কোটি টাকা দেবে বাকী ৪০ কোটি টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঢাকা আহ্সানিয়া মিশন যৌথভাবে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের ‘লাকসাম (দৌলতগঞ্জ)-নাঙ্গলকোট-কোদালিয়া-ঢালুয়া-চিত্তরা বাজার সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের জন্য ৪৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা অনুমোদন দেয়া হয়। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এ প্রকল্পটি ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ হবে। এ প্রকল্পটি প্রয়াত সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন ভূইয়ার নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত হয়।
‘হাওর অঞ্চলে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্থাপন’ ও ‘হাওর অঞ্চলে মৎস্য চাষ ও ব্যবস্থাপনা (১ম সংশোধিত)’ শীর্ষক ৬৪ কোটি ৪৩ লাখ এবং ৩৭ কোটি ২৬ লাখ টাকার পৃথক দুটি প্রকল্পও আজ ‘একনেকে’ অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্প দুটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে সম্পন্ন হবে।
সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম.এ. মান্নানসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভাশেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘একনেকে’ অনুমোদিত ৫টি প্রকল্পের ব্যাপারে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।