598
Published on এপ্রিল 22, 2014
তিনি বলেন, ভাড়া কমানো কথা শুনলে জনগণ এই ট্যাক্সিক্যাব ব্যবহার শুরু করবে। অপরদিকে ভাড়া ১০/১৫ টাকা কমানো হলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানীগুলোর লোকসান হবে না।
‘প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া ৮৫ টাকা নির্ধারণ, সবার জন্য সুবিধাজনক হবে’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি আরামদায়ক ও নিরাপদ ট্যাক্সি সার্ভিস চালুর এই উদ্যোগ গ্রহণ করায় যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনা বাহিনী প্রধান এবং আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া এবং ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসেস-এর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এ কে এম মুজাহিদ উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এসময়ে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট দুস্থ সেনাসদস্যদের কর্মসংস্থান ও জনগণের সার্বিক কল্যাণের ব্রত নিয়েই বিভিন্ন বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মত মুনাফা অর্জনই এর মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। বরং সামাজিক দায়বদ্ধতাকে কেন্দ্র করেই তাদের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তাদের পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রম ইতোমধ্যেই সবার প্রশংসা অর্জন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, পৃথিবীর সকল উন্নত দেশে ট্যাক্সি ক্যাব একটি প্রয়োজনীয় সার্ভিস। মহানগরের অভ্যন্তরে নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য বিশেষ করে বিদেশী পর্যটকরা ট্যাক্সি ক্যাবের উপরেই নির্ভর করেন। ঢাকা মহানগরে এই সার্ভিস ছিল অপ্রতুল। এতে একদিকে জনসাধারণ যেমন এই অপরিহার্য সেবা থেকে বঞ্চিত ছিলেন, অন্যদিকে বাংলাদেশে ভ্রমণকারী বিদেশী নাগরিক ও পর্যটকদের আকর্ষণ করা সম্ভব হচ্ছিল না।
উঁচুমানের শৃঙ্খলা, সাংগঠনিক দক্ষতা, একাগ্রতা ও নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ট্যাক্সি ক্যাব সার্ভিস পরিচালনায়ও আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের এই প্রকল্পটিও সফল হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাজধানী ঢাকা’কে যানজটমুক্ত ও আধুনিক মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তার সরকার ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বর্তমান এসটিডি’র আওতায় ফা¬ইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কম্যুটার রেলওয়ে, ভূগর্ভস্থ টানেল, ঢাকা শহরের চারিদিকে রিং রোড ও ওয়াটারওয়ে নির্মাণসহ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও কুড়িল ফ্লাইওভার, যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার, মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোড ফ্লাইওভার নির্মাণের কাজ নির্ধারিত সময় শেষে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
ঢাকাকে যানজটমুক্ত ও আধুনিক মহানগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারের অন্যান্য কার্যক্রম তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল পরিকল্পনা অনুমোদন ও মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে রাজধানীতে যাতায়াতের সময়ও কমে আসছে।
এ ছাড়াও বেগুনবাড়ী খালসহ হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্প ও ধানমন্ডি লেক সংলগ্ন রাস্তা-ঘাট উন্নয়নসহ সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন ঢাকা শহরের সৌন্দর্য্য অনেকাংশে বৃদ্ধি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজধানীতে আর্টিকুলেটেড বাস সার্ভিস, বিআরটিসির নতুন রুট, স্কুল সার্ভিস, মহিলাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং প্রতিবন্ধীদের আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
দেশের অর্থনীতির বুঁনিয়াদি উন্নয়ন নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শিক্ষার হার ও মান বেড়েছে। উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। যুগোপযোগী শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন এবং সুলভ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ সর্বব্যাপী করা হয়েছে। রাজধানীর বাইরে থেকেও সমান নাগরিক সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী তিনজন নির্বাচিত চালকের মধ্যে তিনটি প্রতীকি চাবি হস্তান্তর করেন।
ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসেস প্রাথমিকভাবে টয়োটা ব্রান্ডের জাপানে নির্মিত ১৫০০ সিসি’র ২৭টি ট্যাক্সিক্যাব পরিচালনা করবে। অপর বেসরকারি সংস্থা টমা গ্রুপ একই ব্রান্ডের ১৯টি ট্যাক্সি ক্যাব পরিচালনা করবে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সর্বমোট ৬শ’ গাড়ী পরিচালনা করবে দুই প্রতিষ্ঠান।