519
Published on মার্চ 18, 2014
তিনি বলেন, ‘একটি মহল বিএনপিকে সংসদে আনার জন্য মায়াকান্না জুড়েছে। কিন্তু এ দলটি নবম সংসদে ৪১৮ দিনের মধ্যে মাত্র ১৭ থেকে ১৮ দিন উপস্থিত ছিল। সেই দলটিকেই তারা আবার সংসদে আনতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াত জোট যখন আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মী এবং সমর্থকের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছিল তখন এই মহলটি চুপ ছিল।
তিনি বলেন, ‘তখন তারা মানবাধিকার লংঘনের কথাও বলেননি, তখন যে নির্বাচন ঠিকভাবে হয়নি সে কথাও বলেননি। মনে হয় তাদের চেতনা তখন অসার হয়ে গিয়েছিলো। তাদের জ্ঞান লোপ পেয়ে গিয়েছিলো। আমার মনে হয় তারা জানতেন বিএনপি’র বিরুদ্ধে কথা বললে তারেক জিয়ার টার্গেটে পরিনত হতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০১৪ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গির হোসেন নানক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী এবং দলের কার্যনির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী।
‘দেশ শান্ত থাকলে, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের জন্য কাজ করলে একটি বিশেষ মহলের জ্ঞানের দরজা খুলে যায়’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে সরকার গঠনের পর আমরা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছি। দেশ আবার উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। মহল বিশেষের যেনো এটা পছন্দ নয়। তাদের মায়া কান্না অবশ্য জঙ্গী, সন্ত্রাসী এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির জন্য।
শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান নামে ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু তার কাজ ছিলো স্বাধীনতা বিরোধী। ’৭৫-এর পর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির একজন দোসর হিসেবে। ক্ষমতায় এসে তিনি যুদ্ধাপরাধী এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসরদের নিয়ে সরকার গঠন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীনা কখনোই ভাবতেই পারেনি বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে, যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় দায়িত্ব পাবেন তারা এতো দক্ষতার সাথে রাষ্ট্রপরিচালনা করতে পারবেন। তাই ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, ডানপন্থী, স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী এবং নব্য বামপন্থী সর্বহারা- কমিউনিস্টসহ নানা ধরনের সংগঠন মিলে-মিশে তখন একাকার হয়ে যায়। তারা নতুন দেশ গড়ায় সহযোগিতা না করে পদে পদে বাধা দেয়া শুরু করে।
শেখ হাসিনা বলেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পরিচালনা করতে যা যা করতে হয় বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে তার সব পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। যে দেশের মানুষের জন্য জাতির পিতা জীবন দিয়ে গেছেন সে দেশের মানুষের কল্যাণ কিভাবে করতে হয় আওয়ামী লীগ তা ভালোভাবে জানে।
তিনি বলেন, ‘যে যত কথাই বলুক না কেন- বঙ্গবন্দুর সেনার বাংলা এগিয়ে যাবেই। এটা কিভাবে করতে হয় আমরা তা জানি- আওয়ামী লীগ জানে। স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়াই আমাদের লক্ষ্য। যে আদর্শ বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়ে গেছেন তা নিয়েই আমাদের চলতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার জন্মদিনে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেয়ার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহবান জানান।