শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

1115

Published on ফেব্রুয়ারি 16, 2014
  • Details Image


প্রধানমন্ত্রী বলেন, রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) ট্রেড ইউনিয়নের আদলে শ্রমিকদের ‘শ্রমিক ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন’ গঠনের অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
তিনি শ্রমিকদের মানোয়ন্ননে তাদের প্রশিক্ষণ এবং উপযুক্ত মজুরি, কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করাই বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। আর এ লক্ষ্যে অর্জনে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের অন্যতম দায়িত্ব হলো শ্রম-সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ বাস্তবায়ন, শ্রম আদালতের মাধমে শ্রম ক্ষেত্রে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নসহ তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা।
প্রধানমন্ত্রী আজ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে ভাষণে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের মধ্যে বর্তমান ষষ্ঠ-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শেষ হলে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০২১ সালের মধ্যে মাথাপিছু গড় আয় বর্তমানের ১ হাজার ৪৪ ডলার থেকে বেড়ে ১ হাজার ৫০০ ডলারে উন্নীত হবে। প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে ১০ শতাংশ হবে এবং দারিদ্র্যের হার বর্তমান ২৬ শতাংশ থেকে কমে ১৩ শতাংশে দাঁড়াবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এ লক্ষ্য অর্জিত হলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে কর্মপরিকল্পনা ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের দিকনির্দেশ দেয়া হয়েছে।
‘শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে এসব বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে’- উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে বেতন ও মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি সবসময়ই সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করেছে। ২০১০ সালে গার্মেন্টস শিল্পের শ্রমিকদের বেতন ৮২ শতাংশ বৃদ্ধি করে ১৬৬২ টাকা থেকে ৩০২৪ টাকা করা হয়। ২০১৩ সালে আবার তা ৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে ন্যূনতম মজুরি ৫৩০০ টাকা নির্ধারণ ও বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কোন উন্নত দেশে শ্রমিকদের বেতন এভাবে বৃদ্ধি করা হয়নি। আমরাই করেছি। শ্রম আইন আরো উন্নত করেছি। শ্রমিক মালিক সর্ম্পক উন্নয়নে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণে পদক্ষেপ নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার শিশুশ্রম বন্ধে বদ্ধপরিকর। এ লক্ষ্যে তাঁর পূর্ববর্তী ১৯৯৬-২০০১ সরকারের মেয়াদে পোশাক শিল্প খাতে সম্পূর্ণভাবে শিশুশ্রম বন্ধ করা হয়।। শিশুশ্রম বন্ধের কার্যক্রম এখনো অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বর্তমানে দেশের ১৪টি জেলায় প্রায় ৫০ হাজার শিশুকে দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রমের আওতায় মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বাউসিয়া এলাকায় একটি ‘গার্মেন্টস শিল্পপল্লী’ প্রতিষ্ঠা উদ্যোগ নিয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে অপরিকল্পিত ও ‘নন-কমপ্লায়েন্স’ পোশাক কারখানা হ্রাস পাবে এবং এ শিল্পে অগ্নি ও অন্যান্য দুর্ঘটনা কমে আসবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রণালয়ে পৌঁছলে শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার তাঁকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক। এসময় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আবদুস সোবহান শিকদার এবং মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত