648
Published on ডিসেম্বর 12, 2013
সুপ্রিম কোর্ট মৃত্যুদণ্ড রিভিউয়ের আবেদন বাতিল করে দেয়ার পরই এই দণ্ডাদেশ কার্যকর করা হলো।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ রাত ১০টায় কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায় কার্যকর করা হবে।
এর আগে হাফেজ মাওলানা মনির ঢাকা জেলা প্রশাসক শেখ ইঊসুফ হারুন ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কাদের মোল্লাকে তওবা পড়ান। কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করতে কারা কর্তৃপক্ষ ৬ জন জল্লাদকে নিয়োগ করে।
গত মঙ্গলবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সকল প্রস্তুতি নেয়া হলেও মোল্লার আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ রায় কার্যকর হওয়ার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করায় কাদেরের ফাঁসি দু’দিন স্থগিত থাকে।
সুপ্রিমকোর্ট ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জামায়াতে ইসলামীর সহকারী মহাসচিব কাদের মোল্লাকে (৬৫) গত ১৭ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে। এরপর আদালত গত ৫ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করে।
প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের ৪ জন বিচারপতি ট্রাইব্যুনালের বিচারে দেয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পরিবর্তন করে তাদের রায়ে বলেন যে, ‘১৯৭১ সালের অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ডই কাদের মোল্লার জন্য উপযুক্ত শাস্তি।’
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মইনউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, আজ রাত ১০টা ১ মিনিটে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে গঠিত ঘৃণ্য আলবদর মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্য কাদের মোল্লা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করার পর তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
কাদেরের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ধর্ষণ, গণহত্যা এবং অন্যান্য অপরাধসহ নৃশংসতায় সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার অভিযোগ ছিল।
এর আগে কাদের মোল্লার পরিবারের সদস্যরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এর আগে কাদের মোল্লা গোসল সেরে নেয়। ঢাকার সিভিল সার্জন ও দুই জন চিকিৎসক তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। কারাগার কম্পাউন্ডের ফ্লাডলাইটগুলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়। ফাঁসি কার্যকর করা উপলক্ষে কারা কর্তৃপক্ষ তিন পর্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের চারপাশে র্যােব, পুলিশ ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। পাশাপাশি যে কোন ধরনের নাশকতা এড়াতে দেশব্যাপী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সতর্ক রাখা হয়।
এদিকে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে আজ সন্ধ্যায় জেলগেটে শত শত মানুষ সমবেত হয়। জনগণ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মিছিল বের করে।
ফাঁসি কার্যকর করার সময় সিভিল সার্জন, আইজি (প্রিজন), জেলা প্রশাসক শেখ ইউসুফ হারুন, স্বরাষ্ট্র সচিব কিউসি মোস্তাক এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বেনজির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।