511
Published on ডিসেম্বর 9, 2013
আজ ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণদান কালে তিনি উপমহাদেশের নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য এ বছর ঝর্না ধারা চৌধুরী ও প্রফেসর হামিদা বানুকে রোকেয়া পদক-২০১৩ দেয়া হয়।
তাঁর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম রোকেয়া সামাজিক বৈষম্যের নিগঢ় থেকে নারী সমাজকে মুক্ত করার অসাধ্য সাধন করছেন। এই মহিয়সী নারীর জন্ম না হলে সমাজে আজ আমরা এত সুযোগ পেতাম না।’
দেশের স্বাধীনতা ও উন্নয়নে নারীর অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী সমাজের ব্যাপক ত্যাগের বিনিময়ে অনেক জাতীয় অর্জন সাধিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন স্বাধীন। তবে একথা মনে রাখতে হবে যে স্বাধীনতার জন্য আমাদের মা-বোনদের দখলদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দালালদের হাতে নির্মমভাবে নিগৃহিত হতে হয়েছিল। এজন্য ১৯৭১ সালে গণহত্যা ও ঘরবাড়ি ধ্বংসকারী দখলদার বাহিনীর হাতে যারা আমাদের মা-বোনদের তুলে দিয়েছিল সেই যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসরদের চিরকাল ঘৃণা করতে হবে।’ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্নে সকলের বিশেষ করে নারী সমাজের সহায়তা কামনা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঊনবিংশ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও বেগম রোকেয়া ছিলেন নারী শিক্ষা ও নারী স্বাধীনতার অগ্রদূত। তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার বহু লেখনী এবং সুদীর্ঘকাল আগে নারী শিক্ষা ও উন্নয়নে তার উপলব্ধির মাত্রা দেখে আমরা বিস্মিত হই। তিনি আরও বলেন, প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও নেতৃত্বের শীর্ষে নারীদের কথা বিবেচনা করায় তার চিন্তার গভীরতা কতোটা ছিল তা বুঝা যায়।
দেশের নারী সমাজের উন্নয়ন এবং তাদের সমঅধিকার ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারি প্রচেষ্টার সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য দেশের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের প্রতি আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বেগম রোকেয়ার চিন্তা-চেতনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার সকল জাতীয় কর্মকাণ্ডে নারীদের অংশগ্রহণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে বিভিন্ন নারী উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, বেগম রোকেয়ার শিক্ষা ও আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তাঁর সরকার নারীর কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। নারীদের দক্ষতা এবং তাদের চাকরি সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা এবং শ্রমবাজারে তাদের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এর লক্ষ্য।
দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের অগ্রগতির ফলে ২০১০ সালে এমডিজি পুরস্কার অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ৮টি উন্নয়ন লক্ষমাত্রার ৬টিই নারী ও শিশু উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা ও নারীর দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রভার্টি রিডাকশান স্ট্রেটেজি পেপার (পিআরএসপি) এর ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।