আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সাধারণ মানুষ পায়: শেখ হাসিনা

702

Published on সেপ্টেম্বর 5, 2013
  • Details Image

সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজতের অপপ্রচারের ব্যাপারে পোশাক শ্রমিকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মের নামে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। পোশাক শ্রমিকদের প্রতি আগামী সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন অশুভ জোট ক্ষমতায় এলে নারী শ্রমিকরা চাকরি হারাতে পারেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতা গ্রহণ করেছে তখনই নারী জাতির উন্নয়নে কাজ করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার গার্মেন্টস কলোনি নির্মাণের লক্ষ্যে বাইপাইলে জমি বাছাই করেছে। তিনি বলেন, বেশ কয়েক হাজার পোশাক শ্রমিকদের সুষ্ঠু আবাসন সুবিধার জন্য এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশাল অবদান রাখছে। এই শিল্প নারী সমাজের ক্ষমতায়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনেও অবদান রাখছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পোশাক খাতের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং এ শিল্প সম্প্রসারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও পোশাক শ্রমিকদের উন্নত জীবন যাপন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে। তিনি বলেন, ২০১০ সালে পোশাক শ্রমিকদের বেতন শতকরা ৮২ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাদের প্রারম্ভিক বেতন ১৬শ' টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা করা হয়। তিনি আরও বলেন, পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ও ওভার টাইমের ভাতা নিয়মিত পরিশোধের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পোশাক কারখানায় সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ড এবং ভবন ধসের ঘটনায় সরকারি পদক্ষেপের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা সম্ভাব্য দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছি।' তিনি বলেন, রানা প্লাজায় ভবন ধসের পর উদ্ধার তৎপরতা এবং পুনর্বাসন কাজ আমাদের এ প্রচেষ্টার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আহত এবং নিহত শ্রমিকদের পরিবারবর্গের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ১৬ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সরকার আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা ব্যয় বাবদ প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা খরচ করেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন শিল্প এলাকায় ২৯টি শ্রমিক কল্যাণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এসব কেন্দ্র শ্রমিকদের জন্য পরিবার পরিকল্পনার পরামর্শ প্রদানসহ শিক্ষা, প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা এবং ওষুধের ব্যবস্থা করছে। প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে দেশবাসীর প্রতি দেশের উন্নয়নের গতি নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা সরকারের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রতি পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, 'আমি যতক্ষণ ক্ষমতায় আছি আপনাদের কোন আন্দোলনের প্রয়োজন নেই। আপনাদের সকল বৈধ দাবি-দাওয়ার প্রতি আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। সাধারণতঃ প্রতি পাঁচ বছর পর পর ওয়েজ বোর্ড গঠিত হয়। কিন্তু আমরা শ্রমিকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সময় শেষ হওয়ার বেশ আগেই নতুন ওয়েজ বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, "আমাদের লক্ষ্য কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের কল্যাণ। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন সাধারণ মানুষ কিছু পায়। অতীতে অনেক সরকার ছিল। তারা শুধু কামাতে জানে। নিজেরা লুট করে, পাশাপাশি একটি লুটেরা শ্রেণি তৈরি করে।" "এদেশের খেটে খাওয়া মানুষ যেন ভালভাবে বাঁচতে পারে সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করি", বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আওয়ামী লীগ শ্রমিকদের আবাসন সংকট নিরসনে কাজ করছে। বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করেছে।এর আগে আর কোনো প্রধানমন্ত্রী তার তহবিল থেকে শ্রমিকদের জন্য এতো টাকা দেয়নি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। আজ বিকেলে আশুলিয়ায় পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের জন্য দেশের প্রথম ডরমিটরির ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নারী পোশাক শ্রমিকরা যাতে সুন্দর ও স্বাস্থকর পরিবেশে থাকতে পারে সে লক্ষ্যেই সরকার এই ডরমিটরি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। গার্মেন্টস মালিকরা পোশাক শ্রমিকদের আবাসন সুবিধা প্রদানে প্রস্তুত থাকলে সরকার মালিক পক্ষকে আর্থিক সহাযতা দেবে দেবে।মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে এ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যো নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব তরিকুল ইসলামও বক্তৃতা করেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত