উত্তরাঞ্চলের উন্নয়নের দায়িত্ব নিলেন জয়

1324

Published on মার্চ 16, 2014
  • Details Image

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিগত পাঁচ বছরে নির্বাচনকালীন সকল অঙ্গীকার পূরণ করেছে এবং আগামী পাঁচ বছরে রংপুর অঞ্চলে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র বিশিষ্ট আইটি বিশেষজ্ঞ জয় আজ বিকেলে রংপুর জেলা স্কুল মাঠে এক বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে একথা বলেন।
বিশ মিনিটের বক্তৃতায় জয় রংপুর ও উত্তরাঞ্চলে জনগণের জন্য বেশ কয়েক বছর আগে একই স্থানে অনুষ্ঠিত জনসভায় তিনি ও তার মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বিভিন্ন অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সরকার রংপুর বিভাগ বাস্তবায়ন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও রংপুর সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা এবং বিগত পাঁচ বছরে এই অঞ্চল থেকে স্থায়ীভাবে মঙ্গা দূর করেছে।’
জয় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিগত পাঁচ বছরে দেশে বিভিন্ন উন্নয়নেমূলক কাজ এবং সুষ্ঠু বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করেছে। একারণে দেশে এখন কোন লোডশেডিং নেই। তিনি বলেন, দেশে মোবাইল ফোনের ব্যবসা বিএনপির এক মন্ত্রীর একচেটিয়া ব্যবসা ছিল বলে এর আগে জনগণকে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে এক লাখ টাকায় একটি মোবাইল সেট কিনতে হতো।
জয় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সস্তায় মোবাইল ফোন কেনার সুযোগ করে দিয়েছে। তাই যে কেউ মাত্র ১ হাজার টাকায় এখন মোবাইল ফোন কিনতে পারেন। দেশে এখন মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা ১১ কোটি।
জয় উল্লেখ করেন পাঁচ বছর আগে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। তখন সমালোচনা করা হয়েছিল যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ কি কাজে লাগবে যেখানে গ্রামের লোকজন কম্পিউটার কিনতে পারে না। তখন আমি জবাব দিয়েছিলাম গ্রামবাসীদের কম্পিউটার কিনতে হবে না এবং আমি গ্রাম এলাকায় কম্পিউটার পাঠাবো যাতে তারা তাদের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় সেবা পেতে পারেন। তিনি আনন্দের সঙ্গে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে।
সজীব বলেন, প্রতিটি গ্রামের সাধারণ মানুষ এখন তাদের দোরগোড়ায় ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র থেকে সব ধরনের সেবা পাচ্ছে।
উত্তরবঙ্গের মাঠজুড়ে সবুজ বোরো ধানের ক্ষেত দেখে জয় বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও সারের কোন ঘাটতি নেই। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নয়ন করা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবছর দেশের শিক্ষার্র্থীদের বিনামূল্যে কোটি কোটি টাকার বই দেয়া হচ্ছে। বিশ্বের অন্য কোন সরকার আজও তা করতে পারেনি।
সজবি ওয়াজেদ জয় বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া আন্দোলনের নামে দেশে শুধু নৈরাজ্যই সৃষ্টি করেছেন। নির্বাচন নিয়েও তিনি সমালোচনা করে চলেছেন। সবগুলো উপজেলাতেই যে সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে তা তিনি বলছেন না।
বিকেল সাড়ে ৪টা ২৭ মিনিটের সময় তিনি জনসভাস্থলে পৌঁছে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। এ সময় করতালি ও স্লোগানে তাকে স্বাগত জানান উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ। জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহম্মদের সভাপতিত্বে বেলা সাড়ে তিনটায় শুরু হয় জনসভা। এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ হাসান জয়, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমান, টিপু মুনশি এমপি, আওয়ামী লীগের সাংঘঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধূরী এমপি, আহসানুল হক চৌধূরী এমপি, মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন এমপি, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি ও সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, যুবলীগের জেলা আহবায়ক রাশেদুন্নবী জুয়েল প্রমুখ।
এর আগে জয় রংপুর সার্কিট হাউজে পৌঁছান। এরপর জনসভাস্থলে আসেন। যাত্রাপথে রাস্তার দু’ধারে অপেক্ষমাণ হাজারো নেতাকর্মী ও উৎসুক জনতা তাকে জয়কে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। জয়কে স্বাগত জানাতে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক ছাড়াও নগর জুড়ে নির্মাণ করা হয় অসংখ্য তোরণ। রংপুর কার্যত এক উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়।
জনসভা শেষে জয় তার গ্রামের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘী ফতেহপুর গ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। সন্ধ্যায় সেখানে তিনি তার বাবা ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়াসহ দাদা-দাদী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের কবর জিয়ারত করেন। পরে সেখানে তিনি কর্র্মীসভায় বক্তব্য রাখেন। পীরগঞ্জে জয়সদনে রাত যাপন শেষে তিনি সোমবার ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত