২০০১ থেকে ২০০৬: ভূমি দখল ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে বিরোধিতা করায় ৫ জন ডিসিকে বদলি করায় এমপি মনি

925

Published on নভেম্বর 9, 2022
  • Details Image

২০০১ সালে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর অন্যের জমি দখল করে নিজের নামে সাম্রাজ্য গড়ে তোলে বরগুনা-২ আসনের (বামনা-পাথরঘাটা) সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম মনি। এমনকি অন্যের ভূমি দখল, সরকারি জমির বন্দোবস্ত, ঠিকাদারি কাজের নামে লুটপাট, নিয়োগ বাণিজ্য, মিথ্যা মামলায় মানুষকে ফাঁসানোর মাধ্যমে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে সে। তার এসব অপকর্মে বাধা দেওয়ায় পাঁচ বছরে পাঁচ জন ডিসিকে বদলি করায় সে। সেই ডিসিরা হলেন- আবুল কাশেম, আলিমুশশান, মো. শফিকুল্লাহ, ফারুক আহমেদ এবং আবুল মনছুর মো. ফয়জুল্লাহ।

২০০৭ সালের ২৯ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। জানা যায়, ২০০৩ সালে বাড়ির সামনে প্রায় ৫০ একর জায়গাজুড়ে একটি টেকনিক্যাল কলেজ স্থাপন করে এমপি মনি। কিন্তু সেখানে তার জমি মাত্র ১০ একর। বাকি ৪০ একর জমি সন্ত্রাসীদের ভয় দেখিয়ে দখল করেছে সে। এরমধ্যে ১০টি সংখ্যালঘু পরিবারের জমিও আছে। এসব জমির বিনিময়ে কাউকে কোনো অর্থ দেয়নি মনি। বামনা ও পাথরঘাটায় মনির জুলুম ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল লোকজন। জমি দখল, সংখ্যালঘু নির্যাতন, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, বিরোধীদলের ওপর দমনপীড়ন, প্রশাসনে খবরদারি-এমন কুকর্ম নাই যা মনির বাহিনী করতো না।

লুটতরাজ ও সন্ত্রাস করার জন্য প্রতিটি ইউনিয়নে বিশেষ বাহিনী গড়ে তুলেছিল এমপি মনি। তার স্ত্রী শায়লাকে বরগুনা জেলা পরিষদের সামনে ৩০ শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত না দেওয়ায় ডিসি ফারুক আহমেদকে ষঢ়যন্ত্র করে বদলি করায় সে। পরবর্তীতে ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজে ১২ জন শিক্ষক নিয়োগে এমপির দুর্নীতির কথা স্বীকার করেন অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, 'আমার কিছু করার ছিল না। সাবেক সংসদ সদস্য উৎকোচ নিয়েছেন বলে শুনেছি।'

২০০১ সালে নির্বাচনে বিরোধিতা করায় ওই বছরই আবেদ মাস্টারের বাড়িতে হামলা করে ৫০-৬০ জনের ক্যাডার বাহিনী। তার বড় ভাই মালেক ফরাজীর হাতের কব্জি কেটে নেয় তারা। সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় ঘরবাড়ি। এরপর আবেদের পরিবার এই ঘটনায় মামলা দায়ের করলে, আবেদের নামে পাল্টা মামরা দায়ের করে তাকে জেলে ঢোকায় এমপি মনির বাহিনী। ২০০৬ সালে আবেদ মাস্টারের জমি দখল করে বিএনপির কার্যালয় বানায় তারা।

পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. আইয়ুব পর্যন্ত এমপি মনির রোষানল থেকে রক্ষা পায়নি। ছাত্রদলের ছেলেদের দিয়ে মনি তার প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং তার নামে একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করায় বলে অভিযোগ করে এই বিএনপি নেতা।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত