রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত

515

Published on জানুয়ারি 11, 2022
  • Details Image

“হে পিতা! তোমার প্রত্যাবর্তনে জাতি পেয়েছিলো মুক্তির দিশা ও বিজয়ের পূর্ণতা। পিতা তোমায় অভিবাদন।” এই শিরোনামকে সামনে রেখে সোমবার ১০ জানুয়ারি মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগর যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করে। কর্মসূচীসমূহের মধ্যে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, মাইকযোগে নগরীতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচার, সকাল ১০.৩০টায় দলীয় কার্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে বঙ্গবন্ধু সহ জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী ও অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা।

সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশের লক্ষ লক্ষ জনগণ বঙ্গবন্ধুকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায় বরণ করে নেয়। বঙ্গবন্ধুকে এক নজর দেখার জন্য সেদিন ঢাকায় অগণিত মানুষের সমাগম হয়েছিলো। রেডিও’র সামনে প্রিয় নেতার বক্তব্য শুনতে থাকা শ্রোতাদের মধ্যে উৎসব মুখর পরিবেশ সেদিন বিরাজ করছিলো। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে রূপ নিতো। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পরে দেশ অনেক পিছিয়ে গেছিলো। দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে আজ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত হয়েছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ আজ একটি বিস্ময়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশের সকল স্তরের উন্নয়ন আজ বিশ্বের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুর কন্যা, দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে আমাদের এই অসামান্য অর্জন। খুব দ্রুত বাংলাদেশ উন্নত দেশে রুপান্তরিত হবে।

তিনি আরো বলে, আমাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে মূলত দুইটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম রয়েছে, একটি আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার নেতৃত্ব দেয় এবং অপরটি আওয়ামী লীগ বিরোধী প্ল্যাটফরম, স্বাধীনতা বিরোধী, সাম্প্রদায়িক ও বাংলাদেশ বিরোধী অংশে নেতৃত্ব দেয়। এই আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তি কখনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে মেনে নিতে পারে না। বাংলাদেশে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা তারা সহ্য করতে পারে না, তারা সবসময় দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে। এদের থেকে আপনাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।

মোঃ ডাবলু সরকার তার বক্তব্যের প্রারম্ভে বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন এর লেখা “বঙ্গবন্ধু কোষ” থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ পড়ে শোনান উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে। তখন পিনপতন নিরবতায় নেতাকর্মীরা আপ্লুত হয়ে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলেন।

ডাবলু সরকার বক্তব্যে বলেন, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় পেলেও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়েই বাঙালি জাতি সেই স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ পেয়েছিলো। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে বাঙ্গালি জাতি বিজয়ী হয়েছিলো। সেই মহান মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে জাতীয় চার নেতার নেতৃত্বে হয়েছিলো। ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশের মাটিতে নেমে আবেগে আপ্লুত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন উপস্থিত সকলে তাঁকে দেখে কেঁদেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ৭মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, “কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।” তাঁর কথাই আজ সত্য হয়েছে কেউ আমাদের দাবায় রাখতে পারে নি বলেই আজকে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। আমরা আশাবাদী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তাঁরই কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাস্তবায়নে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নত ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আবারো প্রমান হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমদের কিছু দাবী করে নিতে হয় না, তিনি নিজেই আমাদের সকল প্রকার চাওয়া-পাওয়া পূরণ করে দেন। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী মহানগরীতে ক্যান্সার, কিডনি ও হৃদরোগ ইউনিটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছেন। যার ফলে এখন আমাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য অধিক অর্থ ব্যয় করে ঢাকা সহ বিদেশে চিকিৎসা গ্রহন হবে না। স্বল্প আয়ের মানুষেরা এখানেই উন্নত চিকিৎসা পাবে। ঠিক তেমনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেতে রাজশাহীতে আমাদের প্রিয় নেতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীকে উন্নত ও পরিচ্ছন্ন নগরীর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে তাঁর মেধা, প্রজ্ঞা দিয়ে একটি উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজশাহী আজ বিশ্বে পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশ বান্ধব নগরী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। কিন্তু এর পরেও বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র থেমে নাই।

তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ষড়যন্ত্র করে কোন লাভ নাই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে ধারা সূচিত হয়েছে তা অব্যাহত থাকবে। এই উন্নয়নের ধারায় কেউ বাধা সৃষ্টি করলে জনগণকে সাথে নিয়ে তার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন , ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম ঠিকই। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বিহীন বিজয় পূর্ণতা লাভ করে নাই। বঙ্গবন্ধুর ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই বাঙালি বিজয়ের পূর্ণতা লাভ করে। সেদিন বঙ্গবন্ধু প্রত্যাবর্তন না করলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়তো। ষড়যন্ত্র তখনও চলছিলো, এখনও চলছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধুর কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবেই, থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি নাঈমুল হুদা রানা, বদরুজ্জামান খায়ের, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহম্মেদ লিমন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, ধর্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, মহিলা সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, শিল্প ও বানিজ্য সম্পাদক ওমর শরীফ রাজিব, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা সম্পাদক ডাঃ ফ ম আ জাহিদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, সদস্য নিঘাত পারভীন, শাহাব উদ্দিন, মুশফিকুর রহমান হাসনাত, আশরাফ উদ্দিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আব্দুল মান্নান, আব্দুস সালাম, অ্যাড. শামীমা আখতারী, তোজাম্মেল হক বাবলু, সৈয়দ মন্তাজ আহমেদ, মজিবুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, বাদশা শেখ, ইউনুস আলী, মোখলেশুর রহমান কচি, মাসুদ আহমদ, কে এম জুয়েল জামান, থানা আওয়ামী লীগের মধ্যে বোয়ালিয়া (পশ্চিম) থানার সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান রতন, মতিহার থানার সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন, নগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বাচ্চু, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, সাধারণ সম্পাদক সাকের হোসেন বাবু, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, নগর মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সালমা রেজা, সাধঅরণ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা মিতু, নগর যুব মহিলা লীগ সভাপতি অ্যাড. ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, নগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, সাধারণ সম্পাদক ডাঃ সিরাজুম মুবিন সবুজ প্রমুখ।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত