শেখ মণি'র জন্মদিন উপলক্ষে যুবলীগের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

1818

Published on ডিসেম্বর 4, 2021
  • Details Image

আজ ৪ ডিসেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি’র ৮৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে সকাল ৯ টায় বনানী কবরস্থানে শহীদ শেখ ফজলুল হক মণিসহ ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ, দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণ করা হয় এবং সকাল ১১ টায় ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে “শেখ ফজলুল হক মণি; সৃষ্টিশীল তারুণ্যের প্রতীক” শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এমপি। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান চৌধুুরী। সভাপতিত্ব করেন-যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সঞ্চালনা করেন-সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

সভাপতির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-আমার প্রিয় যুবলীগের ভাই ও বোনেরা আপনাদের নেতা, শেখ ফজলুল হক মণি আমার বাবা। বাবাকে আমরা খুক কম পেয়েছি। আমি মাত্র ৫ বছর ছিলাম যখন আমার বাবা, শেখ ফজলুল হক মণিকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে হত্যা করা হয়েছিল। বাবা আমাদের সাথে খুবিই বন্ধুসুলভ ছিলেন। আমাদেরকে নিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যেতেন। স্বপ্নের মত ছিল দিনগুলি। বাবার যেই বিষয়টি আমাকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দেয়, সেটা হল বাবার কর্ম ও বাবার মমত্ববোধ। তিনি আত্মকেন্দ্রিক রাজনীবিদ ছিলেন না, নেতা-কর্মীদের প্রতি ছিল তাঁর অপরিসীম মমত্ববোধ ও দরদ। একজন কর্মী মারা যাওয়ায় আমি বাবাকে শিশুর মত কাঁদতে দেখেছি। ঐব ধিং ধহ বসড়ঃরড়হধষ ঢ়বৎংড়হ. বাবার কর্ম আজো বেচে আছে বাবার লক্ষ্য রাজনৈতিক অনুসারীদের মাঝে। বাবার প্রতি তাঁদের যেই ভালবাসা আর সম্মানবোধ সেটা আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করে।

তিনি আরও বলেন-শেখ মণি’র রাজনৈতিক পরিচয় আপনাদের জানা। শেখ মণি যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করে যুবসমাজকে সংগঠিত করে বঙ্গবন্ধুর দেশ গড়ার কাজে নিয়জিত করে একটা সুখী, সমৃদ্ধ, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠন করার স্বপ্ন দেখে ছিলেন। স্বল্প উন্নত রাষ্ট্র থেকে আজকে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে আমরা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কাতারে। আমাদের ঈযধষষবহমব এখন ভিন্ন। আমাদের চিহ্নিত করতে হবে আগামীর সংগ্রাম কি, প্রতিকূলতা কি। চিহ্নিত করতে হবে সেই সংগ্রামের ধরণ কি; প্রতিকূলতার বৈশিষ্ট কি। তিনি আরও বলেন-বঙ্গবন্ধুকন্যা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দীর্ঘ সংগ্রামী পথ পাড়ি দিয়েছেন। বাংলাদেশ আজ জাতীসংঘের অনুমোদণে স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ করেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিন-রাত পরিশ্রমের কারণে। তাই আমাদের সংগ্রামটা এখন ভিন্ন রকম। আমাদের আগামীর সংগ্রাম হবে একটা ন্যায়-পরায়ণ, মানবিক, বিজ্ঞানভিত্তিক, মেধাভিত্তিক, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যে আমাদের কি কি করণীয়? প্রথমে ধরি ন্যায়-পরায়ণ সমাজ গঠনে কি করণীয় এবং কি উপকারিতা? ন্যায়-পরায়ণ সমাজ ব্যবস্থা গঠনে আইনের শাসন সমুন্নত রাখতে হবে, সাফল্যের ংযড়ৎঃ পঁঃ পথ খুঁজলে হবে না। সাফল্য অর্জন করতে হবে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে। কাকে ডিঙ্গাইয়া কোথায় উঠবো এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে। যোগ্যতা আর দক্ষতা থাকলে কাউকে ডিঙ্গানোর প্রয়োজন হবে না। যোগ্যতাই সাফল্যের দরজায় পৌঁছে দিবে। কাউকে ঘুষ, বা তদবির করা দরকার পরবে না। কোন বড় ভাইয়েরও দরকার হবে না। কোথাও ধর্নাও দিতে হবে না। যে কোন উন্নত-সভ্য সমাজ সৃষ্টিতে ন্যায়-পরায়ণ সমাজ ব্যবস্থা পূর্বশর্তে। এটাই সুশাসন কায়েম করার অন্যতম পন্থা।

তিনি আরও বলেন-ইতোমধ্যে আপনাদের কৃতিত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ মানবিক যুবলীগে রূপান্তরিত হয়েছে। এখন আপনাদেরই হাত ধরে আগামীর যুবলীগ এদেশে মানবিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করবে। যেই সমাজে আপনাদের মানবিকতাই প্রধান চালিকা শক্তি হিসাবে কাজ করবে এবং এই মানবিকতাই সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হবে। মানবিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম হলে অন্যায়, অবিচার থাকবে না এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞান ও মেধা ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের জন্য সর্বপ্রথমে দরকার যুক্তিনির্ভর পরিবেশ ও মন-মানসিকতা। চিন্তা-ভাবনায় বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। গবেষণামূলক মতবাদে আমাদের বিশ্বাস আনতে হবে, শুধুমাত্র শিখানো বুলি দিয়ে তোতা পাখির মত বক্তব্য-বিবৃতি দিলে চলবে না। যেটা বলব সেটাতে বিশ্বাস করতে হবে। যেমন ধরেন, আমি বিশ্বাস করি “শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ সবচেয়ে নিরাপদ, কারণ তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা। এদেশের প্রতি তাঁর সর্বাধিক দায়বদ্ধতা রয়েছে এবং আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনার সরকারের কোন বিকল্প নাই।” এই মতামতে আমি বিশ্বাস করি কারণ আমি এই মতামত যুক্তি ও বস্তুনিষ্ঠ গবেষণা দিয়ে প্রমাণ করতে পারব। যুক্তিনির্ভর পরিবেশ সৃষ্টি হলে সাধারণ মানুষের উপর সমাজের প্রভাবশালী উচ্চশ্রেণীর কর্তাদের কর্তিত্ব কমে যাবে। কুসংস্কার থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। সাম্প্রদায়িক শক্তি আর মাথা-চারা দিয়ে উঠতে পারবে না। আমাদের এই সম্প্রীতির বাংলাদেশে আর ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করতে পারবে না, ধর্মীয় দাঙ্গা সৃষ্টি করতে পারবে না। মানুষকে তখন আজগুবি কথায় কেউ বিশ্বাস করাতে পারবে না, যেমন ধরেন “সাইদিকে চাঁদে দেখা যায়” অথবা “জিয়াউর রহমানের ডাকে মানুষ নাকি স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরেছিল”। এই সকল অযৌক্তিক শিখানো বুলি দিয়ে সাধারণ মানুষকে আর বিভ্রান্ত করা যাবে না। বিজ্ঞান ও মেধা ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা সৃষ্টি হলে মানুষকে আর ধোঁকা দেয়া সম্ভব না। এভাবেই প্রগতির দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রগতি মানে উন্নয়ন, জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা। মেধা ও মননের উৎকর্ষ সাধণ। সৃজনশীলতা বৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক উৎকর্ষ সাধণ। আমার কাছে চৎড়মৎবংং মানে সভ্যতার বিকাশ ধাপে ধাপে আবর্তিত হয়ে সভ্যতার বিভিন্ন মাইলফলক অতিক্রম করা। প্রগতি মানে সমঅধিকার ও গণতন্ত্রের বিকাশ। প্রগতি মানে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভিত্তি শক্ত করা।

তিনি আরও বলেন-প্রগতিশীল সমাজ ব্যবস্থা ধর্মান্ধতার কোন স্থান নাই। ধর্মনিরপেক্ষতা শুধু একটা হাল-ফ্যাসন দ্বারস্ত রাজনৈতিক বক্তব্য না, ধর্মনিরপেক্ষতা মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার। যার যার বিশ্বাস তার তার। বিশ্বাস কখনো চাপিয়ে দেওয়া যায় না। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশের একটা তথাকথিত বিরোধী দল বিএনপি-জামাত চায় না আমরা এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে একটা ন্যায়-পরায়ণ, মানবিক, বিজ্ঞানভিত্তিক, মেধাভিত্তিক, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করি। তারা আজ অপপ্রচারের আশ্রয় নিয়ে বিভিন্ন রকমের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, কিভাবে ক্ষমতায় আসা যায়। কিভাবে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা রোধ করা যায়? তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশকে একটা পশ্চাদপদ, মৌলবাদী, ব্যর্থ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা। বিদেশি কোন প্রভুর ধমবহফধ তারা বাস্তবায়ন করছিল তাও আমরা জানি ও বুঝি। বঙ্গবন্ধুকন্যা, শেখ হাসিনা গত ১২ বছরে দেশের চেহারা পাল্টে দিয়ে, এই দেশে দৃষ্টান্তমূলক এবং যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধণ করাতে তাদের সেই উদ্দেশ্য ভেস্তে গেছে, তাদেরও চাকরি চলে যাওয়ার উপক্রম। বিরোধী দল হিসাবেও তারা আন্দোলন সংগ্রাম করতে পারে নাই, চরম ব্যর্থতার পরিচয় বছরের পর বছর দিয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের এখন একমাত্র রাজনৈতিক সম্বল একজন বয়স্ক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি নেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করা। ঐড়ি ঢ়ধঃযবঃরপ ৎবধষষু!!! যাইহোক, সেটা তাদের অভিরুচি। তবে রাজপথে শেখ মণি’র যুবলীগ, এই প্রতিক্রিয়াশীল প্রতিপক্ষদেরকে মোকাবেলা করতে, জনগণের উপর তাদের জুলুম অত্যাচারের জবাব দিতে সর্বদা প্রস্তুত।

রাজনীতি মানে অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার আদায় করা। তাই আপনারা দেখেছেন যুবলীগ গত দুই বছর করোনা প্রাক্কালে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে। প্রায় ৭৫ লাখ মানুষের কাছে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে, শীতবস্ত্র বিতরণ করে যাচ্ছে, টেলিমেডিসিন এর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা ও বিনা মূল্যে অক্সিজেন সেবা প্রদান করা হচ্ছে এবং এবছর আমরা প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের গৃহদান কর্মসূচির আদলে আশ্রায়ন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছি। আগামী ৮ই ডিসেম্বর ইনশাআল্লাহ এই কর্মসূচির ৩য় ধাপের উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। পরিশেষে তিনি আরও বলেন-বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত করতে, একটা আধুনিক, উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ আমাদের লক্ষ্য। যেখানে অর্থনৈতিক বৈষম্য সঙ্কুচিত ও নিয়ন্ত্রিত থাকবে। সবার সমান অধিকার থাকবে, মানুষ মানুষে ভেদাভেদ কমে যাবে। বাঙালি শিল্প, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বিকাশ ঘটবে। একটা প্রকৃতপক্ষে প্রগতিশীল, ধর্মনিরপেক্ষ, মর্যাদাশীল, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে সৃষ্টি করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যে বাংলাদেশ শিক্ষা-দীক্ষা ও জ্ঞান চর্চায় সারা বিশ্বে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। তাই আমার স্বপ্ন যুবলীগ প্রকৃতপক্ষে সুশৃঙ্খল একটা প্রগতিশীল জনদরদি সংগঠনে রূপান্তরিত হবে। যুবলীগ শোষণমুক্ত ও সামাজিক ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ গঠনে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। যুবলীগের প্রসার দেশের গ-ি ছাড়িয়ে বহিরবিশ্বেও বিস্তার লাভ করুক এই আমার কামনা এবং সকল সংকটে ও সংগ্রামে যুবলীগে নিপীড়িত মানুষের পক্ষে, বিজ্ঞানভিত্তিক সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে নেতৃত্ব দেবে। আমাদের লক্ষ্য দক্ষ ও মানবিক যুবশক্তি সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের সম্মান সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বেগম মতিয়া চৌধুরী, এমপি বলেন-মণি ভাইয়ের জন্মদিনে স্মরণসভা করবো এটা কখনও ভাবিনাই। জন্মদিন যেমন আনন্দের তেমনি জন্মদিনে স্মরণসভা অত্যন্ত বিয়োগান্তক বেদনা বিধুর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬দফা শুধু প্রমান করেন নাই, তাকে শুধু বাস্তবায়িত করেন নাই, এটাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন শেখ মণি ভাই। তিনি কারান্তরীণ হওয়ার আগে চারণের বেশে সারাদেশ ঘুরে ছয় দফাকে জনগণের অন্তরে গ্রথিত করেছেন। ছয় দফাকে কেন্দ্র করে মনি ভাই হরতাল পালন করেন। সেই হরতালকে সফল করেছেন নারায়ণগঞ্জের আদমজীর শ্রমিক ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের সমন্বয়ে, এই সন্বয়ের মূল কারিগর ছিলেন মণি ভাই। মনি ভাইয়ের একটি সম্মোহনী গুণ ছিল। সেটা হলো যদি কোন শ্রোতা তার বক্তব্যের দ্বিমত পোষন করতেন, সেই শ্রোতাকেও তার বক্তব্য দ্বারা তার দিকে টেনে নিতেন। এটা তিনি বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকেই শিখে ছিলেন। মণি ভাইয়ের হাত আর কলম সমান তালে চলত যা অন্য কারও নেতৃত্বের মাঝে দেখি নাই। অনেকে বক্তব্য করতে পারে কিন্তু ড্রাফট করতে পারে না, আবার অনেকে ড্রাফট করতে পারে কিন্তু বক্তব্য দিতে পারে না; মণি ভাই ড্রাফট ও বক্তব্য সমান তালে পারতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় ক্যাম্পে ক্যাম্পে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল দিতেন, ভারতে উপস্থিত শরণার্থীদের পাশে গিয়ে তাদেরকেও বিভিন্নভাবে সান্তনা দিতেন। তিনি তরুন সমাজকে, যুবসমাজকে স্বাধীনতার জন্য, যুদ্ধ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করতেন।

তিনিই বলেছিলেন “বিপ্লবের পর প্রতি বিপ্লব আসবেই।” আমি বলব যুবলীগের সবাই যেন মণি ভাইয়ের এই লেখাটি সংগ্রহ করে এবং সকল জায়গায় ছড়িয়ে দেয়। জনগণের পক্ষে যেকোন পরিবর্তন সেটাই হলো বিপ্লব। যেমন এটি এনেছিল ছয় দফা, এটি এনেছিল আমাদের স্বাধীনতা। তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন-১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনা তার পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এদেশে এসেছিলেন, সেদিন যেমন এদেশের মানুষ বলেছিল ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে। ঠিক তেমনি পরশ-তাপসও শেখ হাসিনার পাশে রয়েছে। শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে যুবলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে একই ভাবে বলতে হবে ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে যুবলীগ আছে শেখ হাসিনার সাথে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে প্রফেসর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-আপনারা শুধু রাজনীতিবিদ তৈরি করবেন তা নয়, আপনারা নেতা তৈরি করবেন। সকল ক্ষেত্রে নেতার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন আপনাদের সাথে আছি। তিনি আরও বলেন-মণি ভাইয়ের জন্মদিনের আবহ তৈরি করা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টের, বেদনা বিধুর। শেখ ফজলুল হক মনি শুধু ব্যক্তি নয়, একজন প্রতিষ্ঠানও বটে। বঙ্গবন্ধুর পরে এদেশের বিখ্যাত নেতাদের মধ্যে শেখ মণি আবির্ভূত হতেন। নেত্রী শেখ হাসিনা আসতেন ক্রমান্বয়ে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা ছিল। যে কোন কঠিন পরিস্থিতিতে আপনারা শেখ হাসিনার পাশে থাকবেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এর পরে অনেকেই রাস্তায় ছিলেন না। কিন্তু আমরা ছিলাম।

তিনি আরও বলেন-আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে সামনে যে কোন দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য। বিত্ত-বৈভব তৈরি করার জন্য রাজনীতি না। দেশের উন্নয়নের জন্য জনগণের জন্য রাজনীতি করতে হবে। যেমনটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করেন। যুবলীগের নেতারাও তেমনটাই করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

সঞ্চালকের বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন-আজ প্রোগ্রামে আসার সময় দেখলাম বিএনপি-ছাত্রদলের কুলাঙ্গাররা দেশের বিরুদ্ধে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে। পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুসহ মণি ভাইকে যারা হত্যা করেছে, আরজু মণিকে যারা হত্যা করেছে, সেই জামাত-বিএনপির দোসররাই আজকে দেশের বিরুদ্ধে, নেত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে। এই হত্যাকারীরা আবার নতুন করে মাঠে আসতে চায়। যুবলীগের বন্ধুগণ, শেখ মণি’র আত্মাকে শান্তি দিতে হলে, বঙ্গবন্ধুর আত্মাকে শান্তি দিতে রাজপথে থেকে এই জামাত-শিবির কুচক্রীমহলকে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে। তিনি আরও বলেন-বিএনপির নেতারা অভিযোগ করছেন সরকার নাকি খালেদার শরীরে বিষ প্রয়োগ করেছে। আমি বলতে চাই একজন বয়োজ্যেষ্ঠ সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শরীরে যদি বিষ প্রয়োগ হয়েও থাকে তাহলে সেই বিষ প্রয়োগ করেছে বিএনপির নেতারাই তাদের রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য। কারণ বিএনপি পন্থি ডাক্তাররাই খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করছেন। আপনারা মনে রাখবেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ, ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হরণকারী এবং ২০০৪ সালের গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মীর হত্যাকারী দল হল এই বিএনপি-জামাত।

এসময় উপস্থিত ছিলেন-প্রেসিডিয়াম সদস্য এড. মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, ডাঃ খালেদ শওকত আলী, শেখ ফজলে ফাহিম, মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন, এমপি, মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ নবী নেওয়াজ, মোঃ এনামুল হক খান, ড. সাজ্জাদ হায়দার লিটন, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, ইঞ্জি. মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজ উদ্দিন আহমেদ, মোঃ জসিম মাতুব্বর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ ম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সুব্রত পাল, মুহাঃ বদিউল আলম, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, মোঃ রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাজহারুল ইসলাম, ডাঃ হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, এ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল কবির, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ জহুরুল ইসলাম মিল্টন, শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক ব্যারিস্টার আলী আসিফ খান রাজিব, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাজী সারোয়ার হোসেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডাঃ মোঃ ফরিদ রায়হান, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শাহীন মালুম, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ হারিস মিয়া শেখ সাগর, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আবদুল হাই, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এড. মোঃ হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আব্দুল মুকিত চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক এড. মুক্তা আক্তার, উপ-প্রচার সম্পাদক আদিত্য নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপ-অর্থ সম্পাদক শরীফুল ইসলাম দুর্জয়, উপ-শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার সম্পাদক কাজী খালিদ আল মাহমুদ টুকু, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোঃ সফেদ আশফাক আকন্দ তুহিন, উপ-ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোঃ আলতাফ হোসেন, উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক রাশেদুল হাসান সুপ্ত, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকত, উপ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফজলে রাব্বি স্মরণ, উপ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ মিসির আলি, উপ-জনশক্তি ও কর্মসংস্থান সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আবদুর রহমান, উপ-পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক সামসুল ইসলাম পাটোয়ারী, উপ-শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ ফিরোজ আল আমিন, উপ-কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক মোল্লা রওশন জামির রানা, উপ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শামীম, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্য, উপ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দা সানজিদা শারমীন, সহ-সম্পাদ আবির মাহমুদ ইমরান, মোঃ আতাউর রহমান উজ্জল, মির্জা মোঃ নাসিউল আলম শুভ্র, মোঃ রাজু আহমেদ, ব্যারিস্টার আরাফাত হোসেন খান, মোঃ আলামিনুল হক আলামিন, মোঃ আবদুর রহমান জীবন, মোঃ নাজমুল হুদা ওয়ারেছী চঞ্চল, মোঃ আরিফুল ইসলাম, সামিউল আমিন, মোঃ আলমগীর হোসেন শাহ জয়, মোঃ কামরুল হাসান লিংকন, মোঃ বাবলুর রহমান বাবলু, আহতাসামুল হাসান ভূইয়া রুমি, মোঃ রাশেদুল ইসলাম সাফিন, মোঃ আবু রায়হান রুবেল, ইঞ্জি. কামরুজ্জামান, মোঃ মনিরুজ্জামান পিন্টু, মোঃ মনিরুল ইসলাম আকাশ, এ্যাড. মোঃ জয়নাল আবেদীন চৌধুরী রিগ্যান, কার্যনির্বাহী সদস্য এ্যাড. আব্দুর রকিব মন্টু, প্রফেসর মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, কায়কোবাদ ওসমানী, এড. মোঃ নাজমুল হুদা নাহিদ, সরদার মোহাম্মদ আলী মিন্টু, মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, প্রফেসর ড. বিমান কুমার বড়–য়া, এড. এম এ কামরুল হাসান খান আসলাম, মোঃ হুমায়ুন কবির, এড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া, শেখ মাতিন মুসাব্বির সাব্বির, প্রফেসর ড. মোঃ আরশেদ আলী আশিক, ব্যারিস্টার তৌফিকুর রহমান সুজন, আবুল কালাম আজাদ, শাম্মি খান, মোঃ শহিদুল ইসলাম লাকি, জি এম গাফফার হোসেন, এড. কাজী বসির আহমেদ, মোঃ মেহেরুল হাসান সোহেল, রাজু আহমেদ ভিপি মিরান, মোঃ মুজিবুর রহমান, ইঞ্জি. মুক্তার হোসেন চৌধুরী কামাল, এড. মোঃ শওকত হায়াত, ইঞ্জি. মোঃ আসাদুল্লা তুষার, মানিক লাল ঘোষ, মোঃ মোবাশ্বার হোসেন স্বরাজ, মোঃ মুজিবুর রহমান মুজিব, ব্যারিস্টার চৌধুরী মৌসুমি ফাতেমা, মোঃ তারিক আল মামুন, মোঃ জসিম উদ্দিন, ড. আশিকুর রহমান শান্ত, এ বি এম আরিফ হোসেন, সৈয়দ আলাউল ইসলাম সৈকত, মোঃ অলিদ হোসেন, ডাঃ মোঃ আওরঙ্গজেব, এড. শেখ মোঃ তরিকুল ইসলাম, এড. মোঃ সাজেদুর রহমান চৌধুরী বিপ্লব, বিকাশ চন্দ্র হাওলাদার, মোঃ আসাদুজ্জামান সুজন, মোঃ আরিফুল ইসলাম উজ্জলসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত