আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিন

18711

Published on সেপ্টেম্বর 27, 2018
  • Details Image

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু পরবর্তী সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্মদিন। 

তিনি নব পর্যায়ের বাংলাদেশের নতুন ইতিহাসের নির্মাতা। হিমাদ্রী শিখর সফলতার মূর্ত-স্মারক, উন্নয়নের কাণ্ডারি। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রূপকার। বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার বিশ্বস্ত ঠিকানা, বাঙালির বিশ্বজয়ের স্বপ্ন-সারথী। বিশ্বরাজনীতির উজ্জ্বলতম প্রভা, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পিছিয়ে পড়া দেশ-জাতি জনগোষ্ঠীর মুখপাত্র হিসেবে বিশ্বনন্দিত নেতা। বারবার মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা ‘নীলকণ্ঠ পাখি’, মৃত্যুঞ্জয়ী মুক্তমানবী। তিমির হননের অভিযাত্রী। মানবতার জননী, আত্মশক্তি-সমৃদ্ধ সত্য-সাধক। প্রগতি-উন্নয়ন শান্তি ও সমৃদ্ধির সুনির্মল-মোহনা। এক কথায় বলতে গেলে সাগর সমান অর্জনে সমৃদ্ধ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কর্মময় জীবন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্ব, যোগ্যতা, নিষ্ঠা, মেধা-মনন, দক্ষতা, সৃজনশীলতা, উদারমুক্ত গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গী ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কল্যাণে এক সময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করতো সেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বজয়ের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে চলছে। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ।

মধুমতি নদী বিধৌত গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থান। আর এই নিভৃত পল্লীতেই ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বাবা-মায়ের প্রথম সন্তান। শৈশব কৈশোর কেটেছে দাদা-দাদির কোলে-পিঠে, বাইগার নদীর তীরে, টুঙ্গীপাড়ায়। বাবার দেখা পেতেন কদাচিৎ। পিতা শেখ মুজিবুর রহমান জেল-জুলুম, রাজরোষ ছিল তাঁর নিত্য সহচর। রাজনৈতিক আন্দোলন এবং সংগঠন নিয়েই শেখ মুজিবুর রহমানের দিন-রাত্রি, যাপিত জীবন। এ কারণে পুত্র-কন্যারা পিতার সান্নিধ্য পেয়েছে খুবই কম। পাঁচ ভাই-বোন। কনিষ্ঠদের মধ্যে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেল। শেখ হাসিনা গ্রামবাংলার ধূলোমাটি আর সাধারণ মানুষের সাথেই বেড়ে উঠেছেন। গ্রামের সাথে তাই তাঁর নিবিড় সম্পর্ক।

শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গীপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ) নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর পরিবারকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। তিনি পুরানো ঢাকার মোগলটুলির রজনী বোস লেনে বসবাস শুরু করেন। পরে তিনি যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য হন। আবাস স্থানান্তরিত হয় ৩ নম্বর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে। ১৯৫৬ সাল। শেখ হাসিনা ভর্তি হন টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানম-ির ৩২ নম্বর রোডের বাড়িতে বসবাস শরু করেন। এ সময় তিনি ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন ঢাকার বকশী বাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি কলেজ ছাত্রী সংসদের সহ-সভানেত্রী (ভিপি) পদে নির্বাচিত হন। সে বছরই ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় কিশোর বয়স থেকেই তাঁর রাজনীতিতে পদচারণা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেত্রী হিসাবে তিনি আইয়ুব-বিরোধী আন্দোলন এবং ৬ দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ৬-দফা দাবিতে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানে এক অভূতপূর্ব জাতীয় জাগরণ সৃষ্টি হয়। শাসকগোষ্ঠী ভীত-সন্তস্ত্র হয়ে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। শুরু হয় প্রচ- দমন-নির্যাতন। আটক থাকা অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী দায়ের করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। তাঁর জীবন ও পরিবারের ওপর নেমে আসে গভীর শঙ্কা ও দুঃসহ দুঃখ-কষ্ট। এই ঝড়ো দিনগুলিতেই, কারাবন্দি পিতা বঙ্গবন্ধুর আগ্রহে পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে শেখ হাসিনার বিয়ে হয় ১৯৬৮ সালে। বিয়ের কিছুদিন পর শুরু হয় ১১-দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেত্রী হিসেবে তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে ঘাতকের নির্মম বুলেটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। এসময় বিদেশে থাকায় আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন। জাতির এক ক্রান্তিলগ্নে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ডাক আসে দেশ-মাতৃকার হাল ধরার। সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তাঁর একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলম, অত্যাচার কোনোকিছুই তাঁকে তাঁর পথ থেকে টলাতে পারেনি এক বিন্দু।

১৯৯৬ সালের ১২ জুনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তাঁর সরকারের আমলেই ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত হয় ঐতিহাসিক গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি। সম্পাদিত হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি। বাংলাদেশ অর্জন করে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। প্রবৃদ্ধি ৬.৪ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। মুদ্রাস্ফীতি নেমে আসে ১.৫৯ শতাংশে। দারিদ্র্য হ্রাস পায়। খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, ক্রীড়াসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনার প্রথমবারের (১৯৯৬-২০০১) শাসনকাল চিহ্নিত হয় স্বর্ণযুগ হিসেবে।

২০০১ সালের ষড়যন্ত্র ও কারচুপির নির্বাচনের পর বিএনপি-জামাত জোট সরকার গঠন করে। এ সময় দমন-নিপীড়নের মাধ্যমে জোট সরকার সারাদেশে কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব। হত্যা করা হয় ২১ হাজার দলীয় নেতা-কর্মীকে। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট তদানীন্তন বিএনপি-জামাত জোটের সরকারি মদদে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে চালানো হয় পরিকল্পিত গ্রেনেড হামলা; শেখ হাসিনাকে হত্যা করাই ছিল মূল লক্ষ্য। গুরুতরভাবে আহত হলেও আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। তবে এই হামলায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। চিরতরে পঙ্গু হয়ে যান অসংখ্য নেতা-কর্মী। বাংলাদেশ পরিণত হয় মৃত্যু উপত্যকায়। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে তাদের মদদে সারাদেশে ধর্মীয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের ব্যাপক উত্থান ঘটে। আর তাদের এই অপশাসন রুখে দাঁড়ান অকুতোভয় শেখ হাসিনা। বাংলার আপামর মানুষ তাঁর আহ্বানে রাজপথে নেমে আসে। ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর বিএনপি-জামাত জোট সরকারের শাসনের অবসান হলেও সংবিধান লঙ্ঘন করে বিএনপির রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দীন আহমেদ নিজেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার পদ দখল করেন। হাওয়া ভবনের নির্দেশে চলতে থাকে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং নির্বাচনী প্রহসনের প্রস্তুতি। গর্জে উঠে বাংলাদেশ। জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। শুরু হয় গণ-আন্দোলন। বাতিল হয় পাতানো নির্বাচন। প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হন ইয়াজউদ্দিন। ঘোষিত হয় জরুরি অবস্থা। ফখরুদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত হয় নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

১/১১-এর পর শুরু হয় নতুন ষড়যন্ত্র। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য হাজির করা হয় ‘মাইনাস টু’ তত্ত্বের। শেখ হাসিনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে আসার সময় নিষেধাজ্ঞা জারি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। কিন্তু সাহসিকা জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারি নিষেধাজ্ঞা, ষড়যন্ত্র ও মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে ২০০৭ সালের ৭ মে ফিরে আসেন প্রিয় স্বদেশ ভূমে।

কিন্তু এর মাত্র দু’মাস পর ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই নিজ বাসভবন সূধাসদন থেকে শেখ হাসিনাকে দানবীয় কায়দায় গ্রেফতার করা হয়। জাতীয় সংসদ এলাকায় একটি অস্থায়ী কারাগারে তাঁকে বন্দী করে রাখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় একের পর এক মিথ্যা মামলা। কারাগারে তাঁর জীবননাশের ষড়যন্ত্র চলে। তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। জীবন মৃত্যুকে পায়ের ভৃত্য করে চলতে থাকে গণসংগ্রাম ও আইনি লড়াই। আওয়াজ ওঠে শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন নয়। বদলে যায় দৃশ্যপট। জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয় নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অর্জিত হয় ঐতিহাসিক বিজয়। এককভাবে আওয়ামী লীগই লাভ করে তিন চতুর্থাংশের বেশি আসন। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। গঠিত হয় মহাজোট সরকার। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন দেশে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা এবং দেশরতœ শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার সফলতার সাথে দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ করে বর্তমানে তৃতীয় মেয়াদে দেশ পরিচালনা করছেন। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে দেশবাসী আজ তার সুফল পাচ্ছে। অমিত সম্ভাবনার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে।

এক বর্ণাঢ্য সংগ্রামমুখর জীবন জননেত্রী শেখ হাসিনার। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস তিনি গৃহবন্দি থেকেছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাকে কারানির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। বার বার তাঁর জীবনের ওপর ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ১৯ বার তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল।

সহজ সারল্যে ভরা তাঁর ব্যক্তিগত জীবন। মেধা-মনন, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। পোশাকে-আশাকে, জীবন-যাত্রায় কোথাও কোন প্রকার বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার কোনো ছাপ নেই। নিষ্ঠাবান ধার্মিক তিনি। নিয়মিত ফজরের নামাজ ও কোরান তেলওয়াতের মাধ্যমে তাঁর দিনের সূচনা ঘটে। পবিত্র হজব্রত পালন করেছেন কয়েকবার।

একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ইতোমধ্যে তিনি শান্তি, গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার, দারিদ্র্য বিমোচন, উন্নয়ন এবং দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সৌভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য ভূষিত হয়েছেন মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য পদক, পুরস্কার আর স্বীকৃতিতে।

মিয়ানমার সরকারের ভয়াবহ নির্যাতনে আশ্রয়হীন ৫ লক্ষ্যাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করে ‘‘বিশ্ব মানবতার বিবেক’’ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের চলতি অধিবেশনে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ তাঁর এই মানবিক দৃষ্টান্তের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ়চেতা মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে।

একবিংশ শতাব্দীর অভিযাত্রায় দিন বদলের মাধ্যমে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার সুনিপুণ কারিগর দেশরতœ শেখ হাসিনা। তিনিই বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং ভরসার শেষ আশ্রয়স্থল।

কর্মসূচি :
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার বিশ্ব মানবতার বাতিঘর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার ৭২ তম জন্মদিন। দিনটি উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার বিকাল ৩:৩০ মিনিটে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনার বিষয়বস্তু ‘‘নবীনদের দৃষ্টিতে শেখ হাসিনা”।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এমপি। বক্তব্য রাখবেন জাতীয় নেতৃবৃন্দ।

এছাড়াও বাদ জুম্মা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার (মেরুল বাড্ডা) ও সকাল ৯ টায় খ্রিস্টান এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) ওয়াই.এম.সি. এ চ্যাপেল, ২৯ সেনপাড়া, পর্বতা, মিরপুর-১০ এবং সকাল ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এসব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

একইদিন সকাল ১০টায় ঢাকাসহ সারাদেশে সকল সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালী ও শোভাযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে। অনুরূপ কর্মসূচি জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়েও পালন করা হবে।

বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আগামীকাল ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে আজিমপুর গালর্স স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ও অস্বচ্ছল ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান, শিক্ষা উপকরন ও খাদ্য বিতরণ করা হবে। উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোঃ কামরুল ইসলাম এমপি এবং কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব মির্জা আজম এমপি।

একইদিন ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতিম-লীর সদস্য ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, জাতীয় অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ও বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সামাদ উপস্থিত থাকবেন। সভায় সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ শুক্রবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ-কমিটির উদ্যোগে গরীব ও অসহায় ব্যাক্তিদের মাঝে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রিকশা-ভ্যান বিরতণ করা হবে। উক্ত কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি।

সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি’র আহ্বান

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি’র ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে দেশের সকল মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জাসহ বিভিন্ন উপসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সংস্থাসমূহের সকল স্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। একইসাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সকল জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সমস্ত শাখার নেতৃবৃন্দকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি গ্রহণ করে দিনটি উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন।

তারিখ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
প্রেস বিজ্ঞপ্তি

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত