অগ্রগতির নতুন মাইলফলক বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

4351

Published on মে 12, 2018
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম যোগাযোগ উপগ্রহ সফলভাবে মহাকাশে পাঠানোর জন্য দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, দেশের অব্যাহত অগ্রগতির পথে এটি একটি নতুন মাইলফলক যোগ করবে।

সফলভাবে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পর আজ এক টেলিভিশন বার্তায় তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পতাকা মহাকাশে উড্ডয়ন করায় বাংলাদেশ স্যাটেলাইন ক্লাবের গর্বিত সদস্য হিসেবে নতুন যুগে প্রবেশ করেছে।’

ফ্রান্সের থালেস এলেনিয়া স্পেস কোম্পানির তৈরি ৩ দশমিক ৭ মেট্রিক টন ভরের বঙ্গবন্ধু-১ যোগাযোগ স্যাটেলাইন স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে ফ্লোরিডার কেনাভেরাল উৎক্ষেপণ মঞ্চ থেকে বাংলাদেশ সময় গত রাত ২টা ১৪ মিনিটে কক্ষপথের দিকে যাত্রা শুরু করে।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, এই নতুন স্যাটেলাইট বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, তাজাকিস্তান ও কাজাকিস্তানসহ গোটা অঞ্চলের যোগাযোগ সুবিধা দিতে সক্ষম হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ব সম্প্রদায়ের সামনে একটি মর্যাদাপূর্ণ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করেছিলেন যে, বহিঃবিশ্বের সঙ্গে যথাযথ যোগাযোগ বজায় রাখা ছাড়া দেশকে অগ্রগতির পথে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ জন্যই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মধ্যে ১৯৭৪ সালে রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম ভূউপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন।’

তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ তথ্য ও ডাটা বিনিময়ের মাধ্যমে বহিঃবিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে বাংলাদেশের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে।

প্রধানমন্ত্রী ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইন-১ নির্মাণ ও উৎক্ষেপণে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করায় সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক প্রকল্পটিতে সহযোগিতার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স সরকার এবং দেশ দু’টির জনগণকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণে নির্দিষ্ট কক্ষপথ স্লট ভাড়া দেয়ার জন্য রুশ সরকার ও জনগণকেও ধন্যবাদ জানান।

এ সময় কক্ষপথ স্লটে প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ যেন কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এরআগে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণের পরপরই ফ্লোরিডায় থাকা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের প্রধান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টার সজিব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং তাদের সকলকে অভিনন্দন জানান।

রাতে কথোপকথনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন এবং বঙ্গবন্ধুর সেই উদ্যোগটি আজ মহাকাশ কক্ষপথে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট স্থাপনের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেল।

এ সময় তিনি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

সকালে নগরীতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশের মর্যাদা এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, কারণ তারা আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকায় ভোট দিয়েছে। জনগণ আমাদের সমর্থন দেয়ায় আমরা সরকার গঠন করতে পেরেছি এবং দেশের উন্নয়নে সরকার ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

এ সকল কার্যক্রম গ্রহণের কারণেই বাংলাদেশ মহাকাশে স্থান করে নিতে পেরেছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে বাংলাদেশ শুধু বিনোদনের ক্ষেত্রেই সুফল ভোগ করবে না, এর মাধ্যমে দেশের শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের তথ্য লাভেও সুযোগ পাবে।

এর মাধ্যমে আমরা পার্বত্য ও দ্বীপাঞ্চলের মতো দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্যাটেলাইটের ভাড়া থেকেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবো।

ছবিঃ SpaceX

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত