গত কয়েক মাসের গুপ্ত হত্যায় বিএনপি-জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছেঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

1177

Published on জুন 8, 2016
  • Details Image

সাম্প্রতিক হত্যাকান্ডের ব্যাপারে বিএনপি ও জামায়াতকে অভিযুক্ত করে এ পর্যন্ত দেয়া সরকারের বক্তব্যকে পক্ষপাতদুষ্ট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে একশ্রেণীর লোকের দাবিকে নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, যারা এ দুটি দলকে রক্ষা করতে চায় এবং তাদের দুষ্কর্ম ঢাকতে চায় তারাই এসব কথা বলছে।

প্রধানমন্ত্রী বুধবার বিকেলে তাঁর বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

তিনি তাঁর সাম্প্রতিক বুলগেরিয়া, জাপান ও সৌদি আরব এই তিনটি দেশ সফর সম্পকে গণমাধ্যমকে জানানোর জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এসব সফর থেকে দেশের অর্জনের বিষয়ে উল্লেখ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশেষ করে নিরপরাধ লোকদের টার্গেটেড হত্যাকা- নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম মাহমুদ আলী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সকল ক্লু, হত্যাকান্ডের ধরন এবং গ্রেফতারকৃতদের পরিচয় থেকে বোঝা যাচ্ছে এদের কোন না কোনভাবে জামায়াত ও বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। তিনি বলেন, এই জঘন্য ঘটনার সঙ্গে কোন জঙ্গি এবং সন্ত্রাসীর জড়িত থাকা সম্পর্কে কারো কাছে কোন তথ্য থাকলে তাদের নাম-ঠিকানা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানাতে পারেন।

তিনি বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের মদদে বাংলাদেশে জঙ্গিদের মাথা তুলে দাঁড়ানো ঘটনা কেউ ভুলে যেতে পারে না। তাদের শাসনামলে পুলিশী প্রহরায় জঙ্গিরা মিছিল করেছে এবং দু’টি দলই যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের সুরক্ষা দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা, আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকান্ড, এসএএমএস কিবরিয়া হত্যাকান্ড,এবং কোটালীপাড়ায় বোম হামলার প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে বিএনপি জামায়াতের সম্পর্ক রয়েছে। সুতরাং সম্প্রতিক জঙ্গিবাদি কর্মকান্ডের সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্ক নেই, তার কি যুক্তি আছে।

প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার জন্য বিএনপির ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করে বলেন, এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিএনপির দু’জন শীর্ষ বুদ্ধিজীবী জড়িত রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এই রহস্য উদঘাটন করেছে। ফলে গুপ্ত হত্যাকান্ডের সাথে তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ আমরা পেলে এতে কি ভুল হয়।

তিনি বলেন, সরকার প্রধান হিসেবে এ সব গুপ্তহত্যাকান্ডের সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে আমার কাছে তথ্য আছে এবং আমরা কোন তথ্য ছাড়া কিছু বলতে পারি না। তিনি আরো বলেন, তদন্তের স্বার্থে সরকার এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুপ্তহত্যার সাথে বিএনপি জামায়াতের সম্পর্ক যারা খুজে পায় না, তারা জঙ্গিদের রক্ষা করছে এবং তাদের কর্মকান্ড উৎসাহিত করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রকৃত ইসলামে বিশ্বাসী মসজিদের ইমামগণ থেকে শুরু করে অভিভাবকবৃন্দ সবাইকে আমি অনুরোধ জানাবো যে, তাদের পরিবারের কোন সদস্য এই ধরনের সন্ত্রাসী বা জঙ্গিবাদি পথে যাচ্ছে কি না এটা যেমন তাদের দেখা কর্তব্য। সেই সাথে সাথে মানুষের মাঝে সেই চেতনাটা জাগ্রত হরতে হবে- এটা দুর্ভাগ্য ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর জন্য আজকে সমগ্র বিশ্বে ইসলাম ধর্ম হেয় হচ্ছে।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যারা দেশের অগ্রগতি চায় না, তারাই এখন টার্গেট কিলিং চালাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ হত্যাকান্ডের ধরন দেখেই বলা যায়, কারা এ হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। তারা এমনভাবে সফট টার্গেট কিলিং করছে, যেন বিশ্ববাসী এ নিয়ে কথা বলে। যারা দেশের অগ্রগতি চায় না, তারাই আসলে এ হত্যাকান্ড চালাচ্ছে।

তিনি জানান, সরকারও বসে নেই। হত্যাকারীদের ধরতে গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, বাংলাদেশে কখনোই জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটতে দেয়া হবে না।

তিনি অভিযোগ করেন, দু’টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগসূত্র রয়েছে। কারা জঙ্গিদের দিয়ে মিছিল করিয়েছে, কারা তাদের পুনর্বাসন করেছে-সেটা দেশবাসী ভুলে যায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে আপনারা কথা বলেন। আবার লাল গোলাপ নিয়ে ঘুরে বেড়ানো কেউ যখন হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকে তখন তাকে গ্রেফতার করলে আপনারা আবার সমালোচনাও শুরু করেন।

তিনি বলেন, সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত এক সাংবাদিককে গ্রেফতারের পর আপনারা কথা শুরু করলেন। তাহলে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না?

প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান হিসেবে নিজেন অবস্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত ছাড়া তিনি কারো বিরুদ্ধে কিছু বলেন না। অনেক ক্ষেত্রেই অনেক কিছু জানা থাকলেও মামলার স্বার্থে তা বলা যায় না বলেও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘কাউকে নিয়ে যখন কথা বলি, তখন তো তথ্য থাকে। আই অ্যাম দ্য হেড অব দ্য গভর্নমেন্ট। আমার কাছে তো তথ্য থাকে। তথ্য ছাড়া কোনো কথা বলি না।’

প্রধানমন্ত্রী সবশেষ সৌদি আরব সফর শেষ করে গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে দেশে ফেরেন। গত ৩ জুন সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে যান তিনি। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের বিশেষ আমন্ত্র¿ণে ৩ জুন থেকে ৭ জুন পর্যন্ত সৌদি আরব সফরে প্রধানমন্ত্রী ওমরাহ পালন করেন এবং মদীনায় রাসুল (সা:) এর রওজা জিয়ারত করেন।

এর আগে গত ২৬-২৯ মে জাপান সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। শিল্পোন্নত দেশগুলোর জি-৭ সম্মেলনের আউটরিচ বৈঠকে অংশ গ্রহণের জন্যই ছিল তাঁর এই সফর।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, গত ১৮ থেকে ২২ মে গ্লোবাল উইমেন লিডারস ফোরামে অংশ নিতে বুলগেরিয়া সফর করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান, সৌদি আরব ও বুলগেরিয়া সফরে দেশগুলোর নেতাসহ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আলোচনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পর পর তিনটি সফর আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটি সফরে বাংলাদেশের অনেক অর্জন আছে।

তিনি বলেন, এই তিনটি সফরে যেসব নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, সেই বিশ্বনেতাদের সবাই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাদের অবাক করেছে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে থাকাটা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। সৌদি বাদশাহসহ সরকারের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ফলপ্রসু আলোচনা অনুষ্ঠিত হবার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে দক্ষ-অদক্ষ বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রমিক নেবে বলে জানিয়েছে। সৌদি ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী জেদ্দা চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (জেসিসিআই)’র সঙ্গে বৈঠকের প্রসংগ উল্লেখ করে বলেন, সেখানকার ব্যবসায়ীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বাংলাদেশ ‘সেকেন্ড হোম’ হতে পারে উল্লেখ এখানকার সুযোগ-সুবিধা খতিয়ে দেখার জন্য জেসিসিআই বাংলাদেশে একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল প্রেরণের কথা জানায়।

প্রধানমন্ত্রী জানান, নির্মাণ শিল্পে প্রকৌশলী এবং স্থাপত্যবিদসহ দক্ষ জনশক্তি সরবরাহে সৌদি আরবের বাওয়ানি গ্রুপ এবং বাংলাদেশের সেনা কল্যাণ সংস্থার মধ্যে একটি সমঝোতা স্বারকও স্বাক্ষরিত হয় ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বুলগেরিয়া সফরে দেশটির সোফিয়ায় ‘গ্লোবাল উইমেন লিডার্স ফোরামে’ বাংলাদেশের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। ফোরামে বাংলাদেশে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতায়নে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরা হয়েছে। সেসব পদক্ষেপ তুমুল প্রশংসিত হয়েছে ফোরামে।

বুলগেরিয়া সফর নিয়ে বক্তৃতার আগে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বুলগেরিয়া ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিলো। বুলগেরিয়া বাংলাদেশকে ইউরোপের দ্বিতীয় স্বীকৃতি প্রদানকারি দেশ। সেই বুলগেরিয়ায় গ্লোবাল উইমেন লিডার্স ফোরামে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ফোরামে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের নানা পদক্ষেপের যেমন প্রশংসা করেছেন বিশ্বনেতারা, তেমনি ভূয়সী প্রশংসা করেছেন বুলগেরিয়ার প্রেসিডেন্ট।

শেখ হাসিনা বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের কথা তুলে ধরে বলেন, এসব বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা হয়। সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও বুলগেরিয়ার সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে।

জাপান সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেখানে জি-৭ অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক সাতটি দেশের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারা সবাই বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র সঙ্গে বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং দেশের হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের ফ্যিজিবিলিটি স্টাডি সম্পন্ন করা সহ বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে জাপানের সহযোগিতা কামনা করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং বাই ব্যাক অ্যারেঞ্জমেন্টসহ প্রধানমন্ত্রীর আরও কয়েকটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ সম্পর্কে খোঁজ খবর করতে জাইকাকে নির্দেশ দেন।

জি-৭ আউটরিচ বৈঠকের সাইড লাইন বৈঠক হিসেবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রসংগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইইউতে থাকা না থাকা নিয়ে অচিরেই ব্রিটেনে গণভোট হচ্ছে। তবে, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত অভিমত ইইউতে থাকার পক্ষে। তিনি তাঁর সেই ব্যক্তিগত অভিমত সম্পর্কে আমার মতামত জানতে চাইলে আমি বলি, আমারও অভিমত ব্রিটেন ইইউতে থেকে যাক। এতে করে ব্রিটেনের জনগণ যেমন লাভবান হবে তেমনি লাভ হবে বাংলাদেশেরও। এই বিষয়ে ব্রিটেন প্রবাসী বাংলাদেশী এবং বাংলাদেশী বংশদ্ভুত ব্রিটিশ তিন এমপি ও ব্রিটেনের ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষেই বলেও তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে জানান।

প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবে জনশক্তি নিয়োগ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশ সম্পর্কে অতীত ধারনাটাই পাল্টে গেছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এখন বড়ো ধরনের পরিবর্তন দৃশ্যমান। তাঁরা এখন বাংলাদেশে বিনিয়োগের চিন্তা-ভাবনা করছে । বাংলাদেশে সকল উপজেলায় ইসলামিক সেন্টার নির্মাণে সরকারের পদক্ষেপ এবং সৌদি অন্যান্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশে সৌদি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আগমণ করবেন বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সৌদি আরবে বাংলাদেশের ২০ লাখ শ্রমিক কাজ করছে আমরা আরো স্কিলড নন স্কিলড শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে নিতে আগ্রহী। সৌদি শ্রমমন্ত্রী আরো ৫ লাখ বাংলাদেশী শ্রমিক নিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। আগে সৌদি আরবে শ্রমিকদের আকামা পরিবর্তন করা যেত না এখন করা যাচ্ছে। যে ৪২ হাজার নারী শ্রমিক গৃহকাজে যুক্ত রয়েছেন তারা চাইলে এখন থেকে নিজের পরিবার/স্বামীকে কর্মস্থলে নিয়ে যেতে পারবেন।

সৌদির সন্ত্রাস বিরোধী জোটে যোগ দেয়া সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই জোটে ৪০টি দেশ এ পর্যন্ত যোগ দিয়েছে। আমরা মনে করি এটা যুগোপযোগী পদক্ষেপ। সন্ত্রাস এবং জঙ্গি বিরোধী যেকোন পদক্ষেপেই আমরা সহযোগিতা দিতে প্রস্তÍুত এমনটি সমরিক সহযোগিতা দিতেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি বলে ও তিনি উল্লেখ করেন।

অষ্ট্রেলিয়াতে নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন নির্মাণ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অষ্ট্রেলিয়াতেও আমরা নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন করার উদ্যোগ নিয়েছি । তবে, ’৯৬ মেয়াদে সরকারে আসার পর এই চ্যান্সেরি নির্মাণের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করা হলেও বিএনপি একটিইটও না লাগানোতে এই চ্যান্সেরির অর্ধেক জমি বেহাত হয়ে যাওয়ায় এখন বাকী অর্ধেক জমিতেই চ্যান্সেরি কমপ্লেক্স নির্মাণ হবে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দেশব্যাপী সৃষ্ট সহিংসতার ঘটনাকে অনভিপ্রেত এবং এটা মানা যায়না এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সেই বিষয়ে সকল ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের নির্বাচন সংস্কৃতির অতীত দৃষ্টান্ত এমন বলেই মন্তব্য করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ের জাতীয় সংসদ নির্বাচন,বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলের ভোটারবিহীন নির্বাচন,অতীতের রাষ্ট্রপতিশাসিত সরকারের অধীন নির্বাচন, ২০০৩ সালের ইউপি নির্বাচন,সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়ার সময়কার গণভোট- প্রভৃতি নির্বাচনকালীর সন্ত্রাসের চিত্র তুলে ধরেন।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত